মাহমুদুর রহমানের একুশে পদক প্রত্যাহারের আহ্বান ছাত্র ইউনিয়নের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:০৩ PM , আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৩:৫৪ PM
সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারে মাহমুদুর রহমানকে একুশে পদক দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মাঈন আহমেদের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের বিরুদ্ধে লাখো জনতার প্রতিবাদ দমনে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর গুলিবর্ষণের ইন্ধনদাতা তৎকালীন বিএনপি জোট সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা ও বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জির দালাল মাহমুদুর রহমানকে 'সাংবাদিকতা ও মানবাধিকার' ক্যাটাগরিতে একুশে পদক প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তাকে একুশে পদক প্রদান নিঃসন্দেহে ফুলবাড়ি আন্দোলনে জাতীয় সম্পদ ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে শহীদ আমীন, তরিকুল, সালেহিনের আত্মত্যাগের প্রতি অবমাননাকর ও প্রতারণার শামিল।’
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাগিব নাঈম ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি এর নিন্দা জানিয়ে এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘২০০৬ সালে ফুলবাড়ী গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল একটি সর্বনাশা প্রকল্পের বিরুদ্ধে, যা সফল হলে পুরো উত্তরবঙ্গ বিপর্যস্ত হতো, পানিসম্পদ আবাদি জমি ভয়াবহভাবে বিনষ্ট ও কয়েক লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হতো। এর প্রতিবাদে ২৬ আগস্ট লাখো মানুষের সমাবেশ হয়েছিল। সমাবেশে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছিল আমিন, তরিকুল ও সালেহীন নামে তিন তরুণকে। বাবুল রায়সত চিরতরে পঙ্গু হয় অনেকে আহত হয়েছিলেন দুই শতাধিক মানুষ। আন্দোলনের নেতাদের নামে এখনো মিথ্যা মামলা চলমান। পরে তৎকালীন ফুলবাড়ীর স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধ ও সারা দেশের সচেতন মানুষের সমর্থনের চাপে বিএনপি জোট সরকার ও রাষ্ট্রীয় বাহিনী পিছু হটে। সরকার ফুলবাড়ির জনগণের সঙ্গে ৬ দফা চুক্তি করতে বাধ্য হয়।’
নেতারা আরও বলেন, ‘গণআন্দোলনে এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের ইন্ধন নিঃসন্দেহে মানবতাবিরোধী ও ফৌজদারি অপরাধ। মাহমুদুর রহমানের সে অপরাধের বিচার আজও হয়নি। উল্টো তাকে সাংবাদিকতা ও মানবাধিকার রক্ষায় একুশে পদক দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ফুলবাড়িয়া আন্দোলনে হত্যার অপরাধীকে পুরস্কৃত করা জনগণের গণতান্ত্রিক ও জাতীয় সম্পদ রক্ষায় সাম্রজ্যবাদবিরোধী লড়াইয়ের সঙ্গে প্রতারণা ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী। কারণ সাম্রজ্যবাদ ও তার এ দেশীয় এজেন্টদের লোলুপ দৃষ্টি থেকে দেশের তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষার আন্দোলন ফুলবাড়ীসহ বিস্তৃত এলাকায় মাথা নিচু না করে প্রতিরোধ জারি রেখেছে। অতএব, একুশে পদক দিয়ে মাহমুদুর রহমানের হাতে লেগে থাকা ফুলবাড়ি শহীদের রক্তের দাম মুছে ফেলা যাবে না।’
বিজ্ঞপ্তিতে নেতারা অবিলম্বে মাহমুদুর রহমানের একুশে পদক মনোনয়ন বাতিলসহ ফুলবাড়ি চুক্তির ৬ দফা বাস্তবায়ন ও ফুলবাড়ী আন্দোলনের নেতাদের নামে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আহ্বা জানান।