কমতে শুরু করেছে চালের দাম

চালের দোকান
চালের দোকান  © সংগৃহীত

সরকারের ব্যাপক চাল আমদানি এবং দেশের ৬৪ জেলায় ওএমএসের (খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয়) মাধ্যমে সুলভ মূল্যে চাল বিক্রির ঘোষণায় ইতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। গত মাসের শেষ দিকে হঠাৎ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায় চালের দাম। তবে সেই দাম এখন নিম্নমুখী।

ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যে সব ধরনের চালের দাম আরও কমবে।

ইতোমধ্যে বিআর-২৮, পাইজামসহ কিছু মোটা চালের দাম কেজিপ্রতি ২-৩ টাকা কমেছে। তবে মিনিকেট, কাটারি নাজিরসহ সরু চালের দাম এখনো আগের মতোই বাড়তি।

রাজধানীর রামপুরা, সেগুনবাগিচা, মানিকনগরসহ বিভিন্ন বাজারে খুচরায় স্বর্ণা জাতের মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা কেজি; পাইজাম বিক্রি হচ্ছে ৫৭ থেকে ৬০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬০ থেকে ৬২ টাকা; বিআর ২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৬০ থেকে ৬৩ টাকা কেজি।

তবে মিনিকেট, জিরাশাইল চালের দাম গত সপ্তাহের মতোই ৭৫ থেকে ৮০ টাকা রয়েছে। এ ছাড়া কাটারি নাজির বিক্রি হচ্ছে আগের দাম ৭৬ থেকে ৮০ টাকা কেজি ও বাসমতী ৯২ থেকে ৯৫ টাকা কেজি।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে মোটা চালের দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা কমে ৫৪ থেকে ৫৬ টাকায় নেমেছে, মাঝারি মানের চালের দাম কমেছে ২ টাকা (৫৮ থেকে ৬৫ টাকা)। তবে সরু চালের দাম ৭০ থেকে ৮৫ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে।

রামপুরা বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মতিউর রহমান জানান, চালের দাম কমার দিকে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে মিল থেকে বিআর-২৮, পাইজামসহ কিছু মোটা চাল যে দামে এসেছিল, এই সপ্তাহে প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ১০০ থেকে ১৫০ টাকা কমেছে। এর ফলে পাইকারির পাশাপাশি খুচরা বাজারেও দাম কমছে। তবে কিছু চালের দাম এখনো স্থিতিশীল।

এর আগে গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে দেশে আমনের ভরা মৌসুম সত্ত্বেও পাইকারি বাজারে চালের দাম বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। ফলে খুচরা বাজারেও সরু চালের দাম কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা এবং মোটা চালের দাম ২ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত বাড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার আমদানির ওপর জোর দেয়।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার চলতি অর্থবছরে ১০ লাখ টন চাল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে এসব চাল কেনা হচ্ছে।

জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১৩ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে, যার মধ্যে সর্বশেষ গত বুধবার ২৭ হাজার টন চাল চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে সরকারি গুদামে সংযোজন করা হয়েছে।

সরকার শুল্কছাড় দেওয়ায় বেসরকারি পর্যায়েও ব্যাপক আমদানি হচ্ছে। গত অর্থবছরের এই সময় মাত্র ২ হাজার ৪৬০ টন চাল আমদানি হলেও গত বুধবার পর্যন্ত ২ লাখ ১৫ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, সরকারি ও বেসরকারিভাবে এখন পর্যন্ত মোট ৩ লাখ ২৯ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে দেশে।


সর্বশেষ সংবাদ