বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ হচ্ছে ক্রোয়েশিয়ার কাজের ভিসা

ক্রোয়েশিয়া
ক্রোয়েশিয়া  © সংগৃহীত

ক্রোয়েশিয়ায় কাজের অনুমতিপত্র নিয়ে সেনজেনভুক্ত অন্য দেশে অবৈধভাবে কাজ করছেন বাংলাদেশিরা। রিক্রুটিং এজেন্সি ও বাংলাদেশি কর্মীদের এমন অপতৎপরতার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। তারা এই বেআইনি অভিবাসন বন্ধে ক্রোয়েশিয়া সরকারকে পদক্ষেপ নিতে বলেছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশিদের জন্য কাজের অনুমতিপত্র ও ভিসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশটি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্রোয়েশিয়ার এমন সিদ্ধান্তে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এখনই কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হলে সম্ভাবনাময় শ্রমবাজারটি দীর্ঘদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন ক্রোয়েশিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত অনাবাসী রাষ্ট্রদূত তারেক মোহাম্মদ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে বলে জানিয়েছে একটি শীর্ষ জাতীয় দৈনিক।

চিঠিতে জরুরি ভিত্তিতে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে কর্মী পাঠানো ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে নজরদারি সংক্রান্ত চুক্তি সইয়ের উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেন রাষ্ট্রদূত। নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক মোহাম্মদ ক্রোয়েশিয়ায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও পালন করে থাকেন।

গত ২৩ জানুয়ারি পাঠানো চিঠিতে তিনি জানান, শিগগিরই ক্রোয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশিদের জন্য কাজের নতুন অনুমতিপত্র (ওয়ার্ক পারমিট) দেওয়া বন্ধ করতে যাচ্ছে। দূতাবাস জানতে পেরেছে, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর অপতৎপরতায় বাংলাদেশের নাগরিকদের আর ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের ভিসা দেবে না দেশটির সরকার।

চিঠিতে বলা হয়, ২০২৪ সালে ক্রোয়েশিয়া বাংলাদেশের ১২ হাজার ৪০০ নাগরিককে কাজের অনুমতিপত্র ও ভিসা দিয়েছে। এর মধ্যে ৮ হাজার ক্রোয়েশিয়া যাননি। বাকি ৪ হাজার ৪০০ জনের অর্ধেক দেশটিতে কর্মরত থাকলেও অন্যরা ক্রোয়েশিয়ায় কাজের অনুমতিপত্র নিয়ে সেনজেনভুক্ত অন্য দেশে অবৈধভাবে অবস্থান করছেন। এরই কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ইইউ।

একই সঙ্গে ক্রোয়েশিয়া সরকারকে বেআইনি অভিবাসন বন্ধে পদক্ষেপ নিতেও বলা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশিদের ভিসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত শিগগির বাস্তবায়ন করা হবে, যা বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করবে।

চিঠিতে রাষ্ট্রদূত জানান, বর্তমানে ছয় থেকে সাত হাজার বাংলাদেশি ক্রোয়েশিয়ায় কর্মরত থাকতে পারেন। তারা মূলত নির্মাণ খাত, রেস্তোরাঁ, খাবার সরবরাহের মতো ক্ষেত্রে কাজ করেন। দেশটিতে বিদেশি কর্মীদের কাজের পরিবেশ ও বেতন-ভাতা সেনজেনভুক্ত অনেক দেশের চেয়ে ভালো। তারপরও ক্রোয়েশিয়া গিয়ে বাংলাদেশিরা অন্য দেশে পাড়ি দেন।

রাষ্ট্রদূত তারেক মোহাম্মদ জানান, কর্মী পাঠানো ও অন্য দেশে চলাচল রোধে তদারকির ব্যবস্থা রেখে জরুরি ভিত্তিতে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি হওয়া দরকার। বাংলাদেশ এমন অনিয়ম প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিচ্ছে, এ বিষয়ে ক্রোয়েশিয়া সরকারকে আশ্বস্ত করতেই এই চুক্তি প্রয়োজন। তা না হলে একটি সম্ভাবনাময় বাজার হারাবে বাংলাদেশ।

দৈনিকটি জানায়, একই কারণে ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশে শ্রমবাজার হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রিক্রুট এজেন্সির অপতৎপরতা এবং বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বে অবহেলার কারণে রোমানিয়া, সার্বিয়া ও হাঙ্গেরিতেও দেশের শ্রমবাজার হুমকির মুখে।

বর্তমানে মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ভিসা হচ্ছে এসব দেশে, কখনো বা এর চেয়েও কম। সূত্রটি জানায়, বাংলাদেশিরা এসব দেশ সম্পর্কে না জেনেই চলে আসেন। লক্ষ্যে থাকে পশ্চিম ইউরোপের উন্নত দেশগুলো। তাই তাদের এসব দেশে রাখা যায় না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence