অপহরণের ৪ দিন পর স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩

আহনাফ আল মাঈন নাশিত
আহনাফ আল মাঈন নাশিত  © টিডিসি ফটো

ফেনীতে অপহরণের ৪ দিন পর ডোবা থেকে আহনাফ আল মাঈন নাশিত (১০) নামের এক স্কুল শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ফেনীর দেওয়ানগঞ্জ এলাকার রেললাইন সংলগ্ন ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ফেনী পৌর ছাত্রদল নেতা আশ্রাফ হোসেন তুষার (২০), মোবারক হোসেন ওয়াসিম (২০) ও ওমর ফারুক রিপাত (২০)। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ফেনীর পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন,  রোববার (৮ ডিসেম্বর) শহরের একাডেমি এলাকার আতিকুল আলম সড়কে লাইট হাউজে কোচিং ক্লাস শেষ করে স্থানীয় বায়তুল খায়ের জামে মসজিদে নামাজ পড়তে যায় নাশিত। 

পুলিশ সুপার বলেন, নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে পূর্বপরিচিত আসামি তুষার ও তার সহযোগীরা নাশিতকে অপহরণ করে দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় নিয়ে জুসের সাথে ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করেন। পরে নাশিতের ছবি তুলে তার বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠিয়ে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তারা। একপর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ রেললাইনের পাশে ডোবায় পেলে দেন। মরদেহ পানিতে ভেসে না উঠার জন্য ওই শিক্ষার্থীর স্কুল ব্যাগে পাথর ভরে চাপা দেন তারা।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগ গত ৯ ডিসেম্বর ফেনী মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তারপর দুই দিন ধরে একটি মোবাইল নম্বর থেকে নাশিতের বাবাকে কল করে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে গতকাল রাতে নিহতের বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগ পুলিশকে তুষার নামে এক কিশোরকে সন্দেহের কথা জানান। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাতে তুষারকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হলে তার দেওয়া তথ্যমতে দেওয়ানগঞ্জ এলাকার একটি ডোবা থেকে নাশিতের স্কুল ব্যাগসহ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িত অন্য দুই আসামিকে রাতেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনে কাজ চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার। 

নিহতের বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগ বলেন, আমার ছেলে কোচিং শেষ করে নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যায়। এরপর বাসায় না ফিরলে আমরা তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করি। রাত ১টার দিকে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে মেসেজ দিয়ে ছেলের ছবি দিয়ে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা দিতে রাজিও ছিলাম। তারপরও তারা আমার ছেলেকে হত্যা করল। আমি এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।

প্রসঙ্গত, নিহত শিক্ষার্থী নাশিত ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের আনসার আলী ফকির বাড়ির মাঈন উদ্দিন সোহাগের ছোট ছেলে। পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে তিনি ফেনী পৌরসভার একাডেমি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!