পিলখানা হত্যা মামলা তদন্তে স্বাধীন কমিশন গঠন

২০০৯ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তর রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে কমিশন গঠন করেছে সরকার। সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চকে এ তথ্য জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান ও সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।

এর আগে গত ৫ নভেম্বর পিলখানায় বিদ্রাহে সেনা অফিসারদের হত্যার ঘটনায় কমিশন গঠন করে পুন:তদন্ত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পিলখানা হত্যা মামলার পুন:তদন্ত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা আবেদন ১০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন আদালত।

২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে সেনা কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের মামলায় নিম্ন আদালতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৫২ জনের মধ্যে ডিএডি তৌহিদসহ ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম বড় এ মামলার ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করা হয়। একইসঙ্গে বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া ১৬০ জনের মধ্যে ১৪৬ জনের সাজা বহাল রাখা হয়। বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড নেতা তোরাব আলীসহ ১২ জনকে খালাস দেন আদালত।   

বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার। 

এছাড়া বিচারিক আদালতে তিন থেকে ১০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ২৫৬ আসামির মধ্যে ১০ বছরের কারাদণ্ডের আসামি ১২৮ জন, ৮ জনকে সাত বছর, চারজনকে ৩ বছর এবং ২ জনকে ১৩ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২৯ জন খালাস পান। ২৮ জন আপিল করেনি। ৩ জন মারা গেছেন।

এদিকে বিচারিক আদালতে খালাস পাওয়া ৬৯ জনের মধ্যে ৩১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৪ জনকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট, এছাড়া ৩৪ জনকে খালাস দেন। দুই দিনব্যাপী উপমহাদেশের মধ্যে বৃহত্তম এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।

২০১৫ সালে এ মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করা হয়। 

এই বেঞ্চে ৩৭০ কার্যদিবস আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি হয়। ওই সময়ের অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমসহ বিভিন্ন আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেন।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআরের সদর দপ্তরে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। বিচার হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসংলগ্ন আলিয়া মাদ্রাসা মাঠসংলগ্ন অস্থায়ী এজলাসে। বিচার শেষে ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বিডিআরের প্রাক্তন ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া বিএনপি দলীয় প্রাক্তন সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু (প্রয়াত) ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়। এ ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলাটি এখনো নিম্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence