পলিথিনের বিকল্প আছে যত রকমের ব্যাগ

পলিথিন ব্যাগ
পলিথিন ব্যাগ  © সংগৃহীত

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের কথা ভেবে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। গত ১ অক্টোবর থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। তবে পলিথিনের বিকল্প হিসেবে অনেক ধরনের ব্যাগ আছে। এর প্রথম বিকল্প হতে পারে সোনালি ব্যাগ, যা পাট থেকে তৈরি। এ প্রক্রিয়াটি আবিষ্কার করেছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী মোবারক আহমদ খান। পাটের তৈরি সোনালি ব্যাগ সহজে মাটির সাথে মিশে যায় এবং উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

এরপর বিকল্প হিসেবে উঠে আসে সিনথেটিক ফেব্রিক দিয়ে বানানো ক্যানভাস ব্যাগ। এগুলো রিসাইকেল করা যাবে। সুতি ও ক্যানভাসের সংমিশ্রণে তৈরি করায় কাগজের ব্যাগের তুলনায় এ ব্যাগ বেশি স্থায়ী। ধুয়ে পরিষ্কার করে অনেকবার ব্যবহার করা যায়। আবার বারবার কাগজের ব্যাগের মতো কেনারও প্রয়োজন হয় না। ক্যানভাস ব্যাগগুলো একাধারে সুবিধাজনক, ফ্যাশনেবল ও ট্রেন্ডি। 

চাইলে ব্যবহার করা যাবে কাপড়ের ব্যাগ। যেটা পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী। হাতের কাছে থাকা যেকোনো কাপড় কেটে নিজেই ঘরে বসে তৈরি করে নেওয়া যায় এমন ব্যাগ। আবার বাজারে সহজে কিনতেও পাওয়া যায়। ব্যাগগুলো টাকাও বাঁচায়, আবার পৃথিবীতে প্লাস্টিকও কমায়।

জানা গেছে, অন্তত দেড় হাজার বছর সময় লাগে পলিথিন মাটির সঙ্গে মিশতে। পরিবেশদূষণ, ছাড়াও হরমোন বাধাগ্রস্ত হয় পলথিন ব্যাগ ব্যবহারে। দেখা দিতে পারে বন্ধ্যাত্ব, নষ্ট হতে পারে গর্ভবতী মায়ের ভ্রুণ, বিকল হতে পারে লিভার ও কিডনি। এছাড়াও মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি পলিথিন।  বিভিন্ন ক্ষতির কথা চিন্তা করে দেশব্যাপী পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। 

উপদেষ্টা বলেন, ‘পলিথিন বর্জনের কার্যক্রম ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। শপিং সেন্টার ও দোকান মালিকদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এ কার্যক্রম চলছে। ডিসেম্বরের মধ্যে সচিবালয়কেও প্লাস্টিকমুক্ত ঘোষণা করা হবে।’

বিশ্বে প্রতি বছর ৫ লাখ কোটি পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। আর শুধু ঢাকাতেই ৬৪ শতাংশ মানুষ পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করেন। রাজধানীতে প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি পলিথিন ব্যাগ জমা হচ্ছে। পলিথিন পচে মাটির সাথে মিশে না তাই দিন দিন মাটির উর্বরতা কমে যায়, মাটির গুণাগুণ নষ্ট করে, সাথে বিপন্ন করে তোলে প্রকৃতি ও পরিবেশ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মাছ-মাংস পলিথিনে প্যাকিং করলে ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি হয়। এতে রেডিয়েশন তৈরি হয়ে খাবার বিষাক্ত হতে পারে। পলিথিন ব্যাগ অবাধ ব্যবহারের ফলে চর্মরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্নায়ুজনিত রোগ ও ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের সংক্রমণ হতে পারে।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর বিধান অনুসারে, আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০২ সালের ১ মার্চ বিএনপি সরকার দেশে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এছাড়া ২০১০ সালে দ্বিতীয়বারের মতো পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে সরকার। তবে এ আইনের বাস্তবায়ন হয়নি দুই দশকেরও বেশি সময়ে। আর এবার কাচাবাজার, সুপারশপ থেকে শুরু করে সর্বক্ষেত্রে এ ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ করলো সরকার। 

পলিথিনের প্রথম বিকল্প হতে পারে সোনালি ব্যাগ যা পাট থেকে তৈরি এক ধরনের  ব্যাগ।  এই প্রক্রিয়াটি আবিষ্কার করেছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী মোবারক আহমদ খান। পাটের তৈরি সোনালি ব্যাগ সহজেই মাটির সাথে মিশে যায় এবং মাটিতে উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

আরও পড়ুন: প্রথম মাসের বেতন পকেটে তোলেননি আসিফ মাহমুদ

এ ব্যাগ ছাড়াও কাগজের ব্যাগ হতে পারে সেরা বিকল্প। মলগুলোতে শপিং ব্যাগ হিসেবে অনেকেই কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করেন। কাগজের ব্যাগ পরিবেশবান্ধব। কারণ সহজেই মাটির সঙ্গে মিশে যায় এটি। 


সর্বশেষ সংবাদ