বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টাকা জোগাড় করতে এসেছিলেন, লাশ হয়ে ফিরলেন নাঈম

নাইম আহমেদ
নাইম আহমেদ  © সংগৃহীত

বরগুনা জেলার বড় গৌরিচেনা গ্রামের দিনমজুর বাবার একমাত্র সন্তান নাইম আহমেদ। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টাকা রোজগার করতে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি, তার উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন থেমে গেছে বেইলি রোডে লাগা আগুনে। নিথর নাইম এখন ফিরেছেন বাক্সবন্দি লাশ হয়ে।

শুক্রবার (১ মার্চ) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে নিহত নাইমের বাবা নান্টু মিয়া আহাজারি করে বলছিলেন, নাইমের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে রাত সাড়ে নয়টায়। তখন সে (নাইম) বলে যে, মার্কেটে আগুন লেগেছে, সে সবার সাথে ছাদে আছে।

এ কথা শুনে ছেলেকে ছাদে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন নান্টু মিয়া। বলেছিলেন, আল্লাহ ফয়সালা করবে। তবে তখনো তিনি জানতেন না— ছেলের সঙ্গে এই তার শেষ কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য টাকা জোগাড় করতে ঘরছাড়া ছেলে আর কখনো ফিরবে না, বাবা বলে ডাকবে না।

আরও পড়ুন: বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ড: নিহতদের মধ্যে ২৭ জনের পরিচয় শনাক্ত

শুক্রবার দুপুরে ছেলের লাশ হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় থাকা নান্টু মিয়া বলেন, আমার ছেলে ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে অনার্সে ভর্তি হতে চেয়েছিল। আমাকে বলেছিল বাবা তুমিতো খরচ চালাতে পারবে না। আমি ঢাকায় গিয়ে কাজ করে যা টাকা পাব, সেটা দিয়েই ভর্তি হয়ে যাব। তাহলে তোমার আর কষ্ট হবে না। কিন্তু সেটা আর হলো না। 

নাইমের চাচাতো ভাই মো. আরিফ জানান, নাইম আহমেদের বাড়ি বরগুনা জেলার বড় গৌরিচেনা গ্রামে। ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখে কাজ শুরু করেছিলেন একটি এটিএম বুথের নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে। ২৭ ফেব্রুয়ারি সে কাজ শুরু করে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের মার্কেটে। সেখানে আগুনের ঘটনায় তিনি মারা গিয়েছেন। 

আরিফের অভিযোগ, যে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নাঈম চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন, তারা পরিবারের কোনো খোঁজখবর নেয়নি।

আরও পড়ুন: চাকরির তিন বছর পূর্তিতে ট্রিট, বোনসহ পুড়ে মারা গেলেন স্টামফোর্ডের সাবেক ছাত্রী দোলা

বেইলি রোডে বহুতল ওই ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬–এ পৌঁছেছে। গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

নাঈমের আরেক চাচাতো ভাই মো. ফারুকের হাত ধরে এ কোম্পানিতে চাকরি নেন নাইম। ফারুক বলেন, চাকরির শুরু থেকে অন্য জায়গায় ডিউটি পড়েছিল। কিন্তু এই আগুন লাগা ভবনে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ডিউটি করছিল সে। বনশ্রীতে আমার সঙ্গেই থাকত নাইম।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence