সাধারণ মানুষকে ভোটকেন্দ্রে নিতে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে সরকার: রাশেদ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৪০ PM , আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৮ PM
গণসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে লিফলেট বিতরণ ও সংক্ষিপ্ত পথসভা করেছে গণঅধিকার পরিষদ। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় পথসভা শেষে লিফলেট বিতরণের এই কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।
এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে ভোটকেন্দ্রে নিতে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে সরকার। ভোটকেন্দ্র না গেলে সামাজিক নিরাপত্তার আদলে গরীব ও দুস্থ মানুষদের বিভিন্ন ভাতা কার্ড বাতিলের হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু ভয় দেখিয়ে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে নেওয়া যাবেনা।
তিন বলেন, আমরা প্রহসনের ডামি নির্বাচনের ভুয়া ভোট বর্জনে গণসংযোগ করছি। সাধারণ জনগণ বলছে, তারা ১৪ ও ১৮ সালে ভোট দিতে পারেনি। বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতারাই মধ্যরাতে ভোটচুরির স্বীকারোক্তি দিচ্ছে। ১৮ সালে নাকি উপর মহলের নির্দেশনায় তারা রাতেই ৬০% সিল মেরেছে।
গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, বিএনপিকে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই যে, তারা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। ভারত তার দেশ থেকে বিভিন্ন কূটনীতিক ও রাজনীতিক পাঠিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে বক্তব্য দেওয়াচ্ছে। এভাবেই ভারত একপেশে অবস্থান নিয়েছে। বাংলাদেশকে কর্তৃত্ববাদ রাষ্ট্র বানাতে ভারত ষড়যন্ত্রের ছক কষেছে। এই দেশের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ধ্বংসের দায় ভারত এড়াতে পারেনা। বিভিন্ন জায়গায় ভিন্নমতের মানুষকে গ্রেফতার করে নাশকতার মামলা দেওয়া হচ্ছে। জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় রাখতে প্রশাসনের একটি মহল বড্ড তৎপর।
সকল দেশপ্রেমিক নাগরিককে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়ে রাশেদ আরও বলেন, আমরা প্রশাসনকে বলবো, দেশের জনগণের পাশে এসে দাঁড়ান। কারও অবৈধ ক্ষমতার সিঁড়ি হবেন না। নির্বাচন কমিশনের কালো আইন জনগণ মানেনি। কোন আইন করে, দমনপীড়ন করে চলমান আন্দোলন বন্ধ করা যাবেনা। অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছে, তারা এই প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা। আর যারা ভোরচুরির পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে, তারা রাজাকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। সকল দেশপ্রেমিক নাগরিককে বলবো, রাজপথে নেমে আসুন। সরকারের পদত্যাগ ও সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলছে, সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত না করে আমরা ঘরে ফিরবো না।
গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার স্বীকৃত ভোট চোরের সরকার, যার প্রমাণ ১৪ এবং ১৮ সালের নির্বাচন। গতকাল কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আজিজুল হক তার বক্তব্যে বলেছেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিটে উপর থেকে তার মুঠোফোনে বার্তা আসে যে মধ্য রাতে ৬০% ভোট দিয়ে দেওয়ার জন্য। তিনি নিজেই রাতে নিজ কেন্দ্রে ভোট কাটেন বলে স্বীকারোক্তি দেন।
শেখ হাসিনার সরকার আবার একটি ভোট চুরির নির্বাচন করতে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এ দেশের জনগণ ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন ঘোষণা করেছে। গণ অধিকার পরিষদ এ দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার লড়াইয়ে যেকোনো পরিস্থিতি রাজপথে থাকবে।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শহিদুল ইসলাম ফাহিম বলেন, আওয়ামী লীগ আগামী ৭ জানুয়ারি যে ডামি নির্বাচন এর আয়োজন করতে যাচ্ছে সেই নির্বাচন গণতন্ত্রকামী মানুষ মেনে নিবেনা। বিভিন্ন জায়গায় প্রতিরোধ শুরু হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে চলমান আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত সকলকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তাই ভয়ভীতি উপেক্ষা করে আপনারা রাজপথে নামুন।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।