অন্তঃসত্ত্বা হলে নিয়োগ বাতিল

চূড়ান্ত ফলের অপেক্ষায় মা হতে পারছেন না চাকরিপ্রার্থীরা

মানববন্ধনে চাকরিপ্রার্থীরা
মানববন্ধনে চাকরিপ্রার্থীরা  © টিডিসি ফটো

সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আটকে আছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার ১ হাজার ৮০টি পদের নিয়োগপ্রক্রিয়া। এ পদের চূড়ান্ত ফলের দাবিতে রবিবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সামনে মানববন্ধন করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। সারা দেশ থেকে শতাধিক চাকরিপ্রার্থী মানববন্ধনে অংশ নেন। আগামী সাত দিনের মধ্যে চূড়ান্ত ফলের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

পদটিতে নিয়োগ পাওয়ার প্রধান শর্ত চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীকে জেলা সিভিল সার্জন কর্তৃক শারীরিক সুস্থতা ও অন্তঃসত্ত্বা নয় মর্মে সনদ জমা দেয়া এবং প্রার্থীকে অন্তঃসত্ত্বা হওয়া যাবে না। ৭ হাজার ৬২১ জন নারী প্রার্থী চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য অপেক্ষায়, যাঁদের অধিকাংশই বিবাহিত।

চূড়ান্ত ফলের অপেক্ষায় থাকা নারী প্রার্থীরা বলছেন, এ পদে ২০২০ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। যখন আবেদন করা হয়েছে, তখন অনেক প্রার্থী বিয়ে না করলেও গত সাড়ে তিন বছরে প্রায় সব প্রার্থীর বিয়ে হয়েছে। কারও কারও বিয়ের তিন থেকে চার বছরও হয়েছে। যেকোনো সময় চূড়ান্ত ফল হতে পারে। তাই নারী প্রার্থীরা গর্ভধারণের প্রক্রিয়ায় যেতে পারছেন না। কারণ, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সাত নম্বর শর্তে বলা হয়েছে, চাকরিতে যোগদানের সময় অন্তঃসত্ত্বা থাকা যাবে না। শর্তের জালে আটকে আছে তাঁদের মাতৃত্ব।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নুর আছমা (ছদ্মনাম) নামের এক প্রার্থী বলেন, পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার নিয়োগটি সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় ধরে ঝুলে আছে। সবাই নারী বলেই কি তাঁদের সঙ্গে টালবাহানা করা হচ্ছে? চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা ও ফলপ্রত্যাশী শুধু নারী হওয়ায় অধিকাংশ নারীর সংসারে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পরিবার পরিকল্পনায় বিঘ্ন ঘটছে, মা হওয়া থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে অনেককে। নারীদের বয়স বেড়ে যাচ্ছে। তাই অনেকেই সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হবেন ভবিষ্যতে। পারিবারিক কলহ বৃদ্ধি পাচ্ছে, দুশ্চিন্তায় অনেকে স্বাভাবিকভাবে প্রাত্যহিক সাংসারিক কাজ করতে পারছেন না।

এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা গনমাধ্যমকে বলেন, লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর কিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের সচিব আগের কমিটি বিলুপ্ত করে ভাইভার জন্য নতুন কমিটি গঠন করেন। একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে মোট পাঁচটি ভাইভা বোর্ড করা হয়। প্রতিটি বোর্ডে পাঁচজন করে সদস্য থাকেন। এর মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন সদস্য, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের একজন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের দুজন এবং পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের একজন সদস্য ছিলেন। প্রতিদিন প্রতিটি বোর্ড মৌখিক পরীক্ষার আগে নিয়োগ কমিটির নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও পাঁচটি বোর্ডের পাঁচজন বোর্ড সভাপতির উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে রোল নম্বর বণ্টন করে স্বচ্ছতার সঙ্গে ভাইভা নেন।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নতুন নিয়োগ কমিটির মাধ্যমে স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে ফলাফল প্রস্তুত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ফাইল মন্ত্রণালয়েই পড়ে আছে। কেন চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হচ্ছে না সেটি জানা নেই।

আরও পড়ুন: গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত ভর্তি শুরু

উল্লেখ্য, পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকার ১ হাজার ৮০টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য ২০২০ সালের ১০ মার্চ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ পদে শুধু নারী প্রার্থীদের আবেদনের সুযোগ ছিল, যাঁদের নিয়োগের পর ১৮ মাস প্রশিক্ষণ নিয়ে মাঠপর্যায়ে কাজে নিয়োজিত হওয়ার কথা। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দীর্ঘ তিন বছর পর গত ফেব্রুয়ারিতে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সারা দেশে মোট ৪৬টি জেলায় লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন প্রায় সাড়ে তিন লাখ প্রার্থী। এর মধ্যে ৭ হাজার ৬২১ জন মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হন। কিন্তু লিখিত পরীক্ষা নিয়ে আগের নিয়োগ কমিটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এরপর নতুন নিয়োগ কমিটি গঠন করে গত ২২ মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ৫টি ভাইভা বোর্ডের মাধ্যমে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence