তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইলে পাকিস্তানে যান: ওবায়দুল কাদের
- ঢাবি প্রতিবেদক
- প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৩, ০২:২২ PM , আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২৩, ০২:৩৪ PM
দুনিয়ার কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই, যা ছিলো সেটাও শেষ হয়ে যাচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পাকিস্তানে চলে যেতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বেলা এগারোটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক-ছাত্র মিলনায়তনের মাঠে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতাসহ ১৫ই আগস্টের সকল শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আমাদের ফ্যাসিবাদী বলে, কিন্তু ফ্যাসিবাদের জ্বলন্ত উদাহরণ বিএনপি। বিএনপি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছিলো শেখ হাসিনা সেটা নির্মূল করেছে। বিএনপি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, দেশের কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। তাদের মুখে দূর্নীতির কথা শোভা পায় না কারণ তারা দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন ছিলো। যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে তারাই এখন গণতন্ত্রের কথা বলছে। অবস্থা এমন হয়েছে, আমরা বলি ঠাকুর ঘরে কে রে- তারা বলে, আমি কলা খাই না। ফখরুল সাহেব, দুনিয়ার কোথাও এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই, তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইলে পাকিস্তানে যান।
দেশে পশ্চিমাদের হস্তক্ষেপ সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইউরোপ, আমেরিকার নেতৃবৃন্দ ঘুরে ঘুরে বাংলাদেশে কেন? আমরা তো তাদের দাওয়াত করি না, তারা দাওয়াত ছাড়াই চলে আসেন। পাকিস্তানে তো আরও আগে নির্বাচন, সেখানে যান। তারা সেখানে যাবে না, এসে শুধু আমাদের উপরে ভিসা নীতি প্রয়োগ করবে। ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হবে নির্বাচনে হস্তক্ষেপকারীদের উপরে। আমরা তো চাই নির্বাচন সুষ্ঠু হোক কিন্তু বিএনপি চায় নির্বাচন সহিংস করতে, নির্বাচনে বাধা দিতে। তাদের বেলায় তো কোন ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হচ্ছে না। শেখ হাসিনা ইউরোপ-আমেরিকার 'ভারত মহাসাগরীয় পরিকল্পনা' ফাঁস করায় আমাদের দিকে নজর দিয়েছে, আমাদের উপর ভিসা নীতি প্রয়োগ করেছে।
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, জাতি রাষ্ট্রের নির্ভেজাল স্রষ্টা ছিলেন বঙ্গবন্ধু। পলাশীর ময়দানে যেমন সিরাজ খুব কাছের সেনাপতিদের জন্য পরাজিত হয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধুও ১৫ আগস্ট নিজের কাছের মানুষ দ্বারাই শহীদ হয়েছিলেন। মোহনলাল যেমন সিরাজের পক্ষে লড়াই করে প্রাণ দিয়েছিলেন ঠিক তেমনই কর্ণেল জামিল বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে এসে শহীদ হয়েছিলেন। পলাশীর ইয়ার লতিফের সাথে ৭৫ সালের জিয়ার পূর্ণ মিল রয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে কোন নজির নেই যেখানে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুরা টার্গেট হয়েছিলো। কিন্তু এতকিছুর পরেও কিছুটা দেরিতে হলেও আজ বাংলাদেশের পথচলা স্বাভাবিক হয়েছে। অল্প দিনেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে যা সারা বিশ্বের কাছে বিস্ময় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সাহস থাকলে আপনি দেশে আসুন, রাজপথে ফয়সালা হবে। আদালতের রায় অনুযায়ী, তারেক রহমানের কোন বক্তব্য অনলাইনে দেওয়া নিষিদ্ধ কিন্তু সেটা অমান্য করে তিনি প্রতিদিন অনলাইনে বক্তব্য দিচ্ছেন। কানাডার আদালত ৫ জন ব্যক্তিকে টেররিস্ট বলেছে যারা দেশের বৈধ সরকারকে পতনের চেষ্টা করছে, তার একজন হলো তারেক রহমান। বিদেশের মাটিতে বিএনপি একটি টেররিস্ট অর্গানাইজেশন হিসেবে পরিচিত। গণতন্ত্রের লেবাসধারীদের তৎপরতা কি আপনারা দেখেন না? এই টেররিস্টদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ যেখানে আমাদের সবাইকে শামিল হতে হবে।
এসময় তিনি বঙ্গবন্ধু, শেখ কামাল ও ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের স্মৃতিচারণ করেন এবং ছাত্রলীগের যেসব ইউনিটে কমিটি নেই সেখান দ্রুত কমিটি নিশ্চিত করে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে দল থেকে বহিষ্কার করে দলকে নির্ভেজাল করার আহবান জানান।
ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদান করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।