আজ তারাবিহ কাল প্রথম রোজা, জেনে নিন গুরুত্ব ও ফজিলত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৩, ১০:২৬ AM , আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৩, ১০:৫৪ AM
রহমত, মাগফিরাত আর নাজাতের সওগাত নিয়ে এসেছে পবিত্র মাহে রমজান। আজ (২৩ মার্চ) রাতে তারাবিহ’র সালাত আদায়ের পর ভোরে সেহরি খাবেন দেশের মুসলমানরা। কাল রাখবেন প্রথম রোজা। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে রমজান সংযম, আত্মশুদ্ধি এবং ত্যাগের মাস। রমজান রহমত (আল্লাহর অনুগ্রহ), মাগফিরাত (ক্ষমা) ও নাজাত (দোজখের আগুন থেকে মুক্তি)-এ তিন অংশে বিভক্ত। এ মাসে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, স্ত্রী-সহবাস ও যে কোনো ধরনের পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে রোজা পালন করেন মুসলমানরা।
ঢাকায় প্রথম দিন সেহরির শেষ সময় রাত ৪টা ৩৯ মিনিট। শুক্রবার প্রথম রোজার ইফতারের সময় ৬টা ১৪ মিনিট। আগামী ১৮ এপ্রিল দিনগত রাতে (রমজানের ২৬তম রাত) পবিত্র লাইলাতুল কদর পালিত হবে।
পবিত্র কুরআন খতমের পূর্ণ সওয়াব থেকেও যাতে কেউ বঞ্চিত না হন সেজন্য রমজান মাসে খতমে তারাবিহ নামাজ পড়ার সময় সারাদেশের সব মসজিদে একই পদ্ধতি অনুসরণ করার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। রমজান মাসের প্রথম ৬ দিনে দেড় পারা করে ৯ পারা এবং বাকি ২১ দিনে এক পারা করে ২১ পারা তিলাওয়াত করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
এভাবে ২৬ রমজান দিনগত রাতে অর্থাৎ শবে কদরে পবিত্র কুরআন খতম করার অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এ মাসের শেষ অংশে রয়েছে হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম লাইলাতুল কদরের রাত। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, রমজান মাসে প্রতিটি নেক আমলের সওয়াব আল্লাহ ৭০ গুণ বাড়িয়ে দেন।
তারাবিহর নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
তারাবির নামাজ পবিত্র রমজানের অন্যতম একটি ফজিলতপূর্ণ আমল। এশার নামাজ আদায়ের পর তারাবি আদায় করা সুন্নত। রমজান মাসে প্রত্যেকটি নফল ইবাদতের সওয়াব ফরজের সমান দেওয়া হয়। আর একটি ফরজের সওয়াব সত্তরটি ফরজের সমপরিমাণ বলে গণ্য করা হয়। এটি রমজান মাসের অনন্য বৈশিষ্ট্য।
আরবিতে ‘তারাবি’ শব্দের অর্থ আরাম বা বিশ্রাম করা। তারাবি নামাজ পড়াকালে প্রতি চার রাকাত পর কিছু সময় বসে আরাম করার বিধান ইসলামী শরিয়তে রয়েছে। তাই এই নামাজকে তারাবি নামাজ বা সালাতুত তারাবি বলা হয়। প্রতি চার রাকাত পরপর আরাম করার কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, দরুদ শরিফ ইত্যাদি পাঠ করা যেতে পারে। তারাবি নামাজ ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দিলে অবশ্য গুনাহগার হবে। কিন্তু তারাবির কাজা ওয়াজিব হবে না। কারণ, সুন্নতের কাজা নেই। (ফাতাওয়া শামি : ২/৪৫; আহসানুল ফাতাওয়া : ৩/৫২৪)
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানে একটি নফল আমল করল সে যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল সে যেন অন্য মাসে সত্তরটি নফল আদায় করল।’ (মিশকাত, হাদিস : ১৮৬৮)
তারাবিহর নামাজ
তারাবির নামাজ রমজান মাসের একটি বিশেষ ইবাদত। এ নামাজ নারী-পুরুষ উভয়ের ওপর সুন্নত। তবে পুরুষের জন্য তারাবির জামাত করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা কেফায়া। আর নারীরা জামাত ছাড়াই একা একা পড়ে নেবে। রমজান মাসে তারাবি নামাজের মধ্যে একবার কোরআন খতম করা সুন্নত।
এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত দুই রাকাত করে দশ সালামে বিশ রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। কিন্তু তারাবি নামাজ অবশ্যই এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ববর্তী সময়ের মধ্যে আদায় করতে হবে।
তারাবিহর নামাজের নিয়ত
নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা, রাকাআতাই সালাতিত তারাবি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবার।
অর্থ : আমি কেবলামুখী হয়ে দুই রাকাত তারাবি সুন্নত নামাজের নিয়ত করছি; আল্লাহু আকবার।
তারাবিহর নামাজের দোয়া
‘সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’
তারাবিহর নামাজের মোনাজাত
আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।’