আখেরি জমানায় জারজ সন্তানে ভূমিকা রাখবে ‘মিল্ক ব্যাংক’

গবেষণাগারের দৃশ্য
গবেষণাগারের দৃশ্য  © ফাইল ফটো

মিল্ক ব্যাংক নিয়ে দুই পক্ষের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখে দুইদিন ধরে মাথা ভন ভন করছে। আমি শুধু এইটুক বুঝতে পারছি, আখেরি জমানায় জারজ সন্তান হবে বেশি। কোনও না কোনও ভাবে এই মিল্ক ব্যাংকও ভূমিকা রাখবে এখানে। আর এও বুঝতে পারছি, মায়ের দুধের অভাবে বাচ্চা এটলিস্ট মারা যায়না। নবজাতকের জন্য স্পেশাল দুধ আশা করি সব দেশেই আছে।

ছোট থাকতে একবার এক কাহিনী পড়েছিলাম আরবি পত্রিকায়। বিয়ের ৪৫ বছর পর, প্রায় ১৪টা সন্তান হওয়ার পর জানতে পারে তারা ছোট বেলায় একই মহিলার দুধ পান করেছিল। অর্থাৎ তারা মূলত দুধ ভাই-বোন। বিয়ে তাদের মাঝে বৈধই না। এর কিছুকাল পর আরেক বৃদ্ধা এসে শেষকালে মাফ পেতে স্বীকারোক্তি দিলেন যে পারিবারিক ঝামেলা বাড়াতে সে গোপনে তার দুই ভাইয়ের সন্তানদের দুধ খাইয়ে দেন। কারণ সেই দুই ভাই সব সময় বলত তারা নিজেদের বাচ্চাদের মাঝে বিয়ে দিয়ে সম্পর্ক আরো মজবুত করবে।

বাস্তবেই তারা তাদের সন্তানের মাঝে বিয়ে দেন। দুই চাচাতো ভাই বোন মূলত দুধ ভাই বোন হয়ে যায়। এবং সেই মহিলার স্বীকারোক্তির পর তাদের খুব সুখের সংসার ভেঙে যায়।

আমার চোখে দেখা এক পরিবার, যেখানে দুই কাজিন ছোট বেলা থেকে এক সাথে বড় হচ্ছে। সবার আড়ালে তাদের মাঝে প্রেমেও হয়। বিয়ের বয়স হলে যখন তারা তাদের ভালবাসার কথা মায়েদের জানায় তখন মায়েরা আসমান থেকে পড়েন এই বলে যে শখের বসে একে অপরের বাচ্চাকে দুধ খাইয়েছিলেন, দুধ ভাই বোন হওয়াতে কখনো পর্দার জন্যও বলেন নাই। কেউই ভাবে নাই এমন কিছু হবে! এই দুধ খাওয়ার কথা শুধু মুরুব্বিরাই জানতেন। কারো সাথে শেয়ার করার প্রয়োজন বোধ করেন নাই। কিন্তু বেপর্দায় থেকে আর একই সাথে বড় হওয়ার কারণে বাচ্চাদের মাঝে তো সম্পর্ক হয়ে যায়।

দুধের সম্পর্ক মোটেও হালকা নয়

এখন এই মিল্ক ব্যাংকের মাধ্যমে কত শত মানুষ দুধ ভাই বোন হবে। কারো না কারো সাথে কোনো না কোনো ভাবে রিস্তা হবে। কেউ হয়ত একটা সময় পর এসে জানবে, কারো হয়ত আজীবনই জানা হবেনা।

এই ইস্যু নিয়ে বিধর্মীরা ফাঁকে দিয়ে বেশ মজা লুটে নিলো। মানবতার ধর্ম তাদের কাছে বড় বলে এইখানে ইসলামকে সেকেলে বলে ট্যাগ দিলো। সেটা ব্যাপার না। ব্যাপার হচ্ছে তারা আরবে আগে ঐতিহ্য ছিল দুধ মাতা রেখে বাচ্চাকে দুধ পান করানো, এমনকি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুইজনের দুধ পান করেছিলেন।

এইসব উদাহরণ টেনে বিষয়টাকে শুধু হালাল নয়, বরং সুন্নত করার প্রতি ওঠে পড়ে লাগলো। এইটুকুতেই কি আর ফতওয়া দেওয়া যায়? তখন তিনি নবুওয়ত পেয়েছিলেন? তখন দুধ পানের মাধ্যমে হওয়া সম্পর্কের মাহরাম/গাইর মাহরাম বিষয়টা কি ছিল? পরবর্তীতে কি সেই সব সম্পর্ক সাবধানতার সাথে বজায়ে রাখা হয়নি?

পরের বিষয় তো আর কেউ ভাববে না

নিজে দুধ দেওয়া ও নিজের বাচ্চাকে মিল্ক ব্যাংক থেকে দুধ খাওয়ানো থেকে সাবধান হোন। আপনার সন্তানের একান্তই দুধ মায়ের প্রয়োজন হলে নিজেদের মাঝে পরিচিত দ্বীনি মহিলার দুধ পান করাবেন। যার সাথে সব সময় যোগাযোগ থাকবে এবং বিষয়টি পরিবারের সবাই জানবে। যাতে করে বিয়ের কোনো বিষয় সেখানে না ঘটে।

এমনকি বিয়ের সময়েই জেনে নেবেন, পাত্র বা পাত্রী কখনো মা ছাড়া অন্য কারো দুধ পান করেছিল কিনা। পান করলেও কার করেছে সব খোঁজ নিয়ে আগানো জরুরি। মিল্ক ব্যাংকের উপকার থেকে ভয়াবহতা বেশি। তাই আশেপাশের সবাইকেই দুধপান দ্বারা যে সম্পর্ক হয়ে যায় তা বুঝাবেন।

লেখক: স্যোশাল মিডিয়া এক্টিভিস্ট


সর্বশেষ সংবাদ