এক হাজারের বেশি আসন ফাঁকা

বেসরকারি মেডিকেলে নতুন করে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

মেডিকেল শিক্ষার্থী
মেডিকেল শিক্ষার্থী  © ফাইল ছবি

দেশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস-বিডিএস কোর্সে নতুন করে ভর্তির সুযোগ পেতে যাচ্ছেন দেশি এবং বিদেশি শিক্ষার্থীরা। চলতি সপ্তাহে ভর্তির আবেদনগ্রহণের পোর্টাল চালু করা হবে। এছাড়া সরকারি মেডিকেলে বিদেশি কোটায় শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদনও নেওয়া হচ্ছে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তির পোর্টাল পুনরায় খুলে দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে আবেদন জানিয়েছে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির পোর্টাল পুনরায় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (বেসরকারি মেডিকেল কলেজ) ডা. উপল সীজার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিপিএমসিএ’র আবেদনের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ আবেদনের পোর্টাল চালুর অনুমতি দিয়েছে। আজ রোববার থেকে বেসরকারি মেডিকেলে বিদেশি শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া চলতি সপ্তাহ থেকে দেশি শিক্ষার্থীদেরও আবেদনগ্রহণ শুরু হবে।

‘বিদেশি শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এজেন্সির মাধ্যমে আমাদের দেশে পড়তে আসে। এসব এজেন্সিকে যে মেডিকেল কলেজগুলো বেশি কমিশন দেয় তারা তাদের ওখানে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করায়। কমিশন কম দিলে শিক্ষার্থী ভর্তি করায় না। এটিও একটি কারণ হতে পারে।’—অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা, মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর

জানা গেছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি কমেছে। সব মিলিয়ে এক হাজারের বেশি আসন ফাঁকাই রয়েছে। ফাঁকা আসনের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ভর্তির পোর্টাল পুনরায় চালু করতে আবেদন করে বিপিএমসিএ। গত ১২ মে এ আবেদন করা হয়। 

আবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৬৭টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস কোর্সে দেশি ও বিদেশি ৬ হাজার ২০৮টি আসনের মধ্যে এখনো ১ হাজার ২০০-এর মতো আসন শূন্য রয়েছে। অনেক ভালো ভালো বেসরকারি মেডিকেল কলেজেও দেশি-বিদেশি এবং অসচ্ছল ও মেধাবী কোটায় আসন শূন্য রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি কমছে:

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে সরকারি ৩৭টি মেডিকেল কলেজ ও ৯টি ডেন্টাল কলেজে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আসন রয়েছে ২২১টি। এর মধ্যে সার্কভুক্ত দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তানের জন্য ১১৭টি, মিয়ানমার ও প্যালেস্টাইনের জন্য সার্কভুক্ত দেশের সমান সুযোগ সংবলিত ২৮টি, অন্যান্য দেশের জন্য ৪৯টি ও সংরক্ষিত পাঁচটি আসন রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি ৬৩টি মেডিকেল কলেজ ও ২৬টি ডেন্টাল কলেজে মোট ৬ হাজার ২০৮টি আসনের মধ্যে ২ হাজার ৭৯০টি বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছর দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ১ হাজার ৯৩০ বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি কলেজে আবেদন করেছেন ৩৯৪ জন ও বেসরকারিতে ১ হাজার ৪৮৯ জন আবেদন করেছেন। এ ছাড়া আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজে আবেদন করেছেন ৪৭ জন।

মেডিকেল শিক্ষার্থী

গত বছর মোট আবেদন করেছিলেন ৩ হাজার ৫৩২ জন। তাদের মধ্যে সরকারিতে আবেদন করেছিলেন ৬৩৩ ও বেসরকারিতে ২ হাজার ৮২৯ জন। আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজে আবেদন করেছিলেন ৭০ জন। সে হিসাবে গত বছরের তুলনায় এবার আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ১ হাজার ৬০ জন। এর মধ্যে সরকারিতে আবেদন কমেছে ২৩৯টি, বেসরকারিতে কমেছে ১ হাজার ৩৪০টি। 

অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ বছর মোট আবেদন জমা পড়েছে ১ হাজার ৯৩০টি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৬৮ শতাংশ বা ১ হাজার ৩১২ জন শিক্ষার্থী ভারতের। এরপর নেপালের ১৭ শতাংশ বা ৩২৭, পাকিস্তানের ৯ শতাংশ বা ১৬৯ ও ভুটানের ২ শতাংশ বা ৪৩ জন শিক্ষার্থী। এ ছাড়া প্যালেস্টাইনের ৩২, শ্রীলঙ্কার ২২, যুক্তরাষ্ট্রের ৯ এবং আফগানিস্তান, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ার ৪ জন করে শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। 

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে বিদেশি শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এর মধ্যে ভারত-নেপালের শিক্ষার্থী কমে যাওয়া অন্যতম। আমাদের দেশে ভারত এবং নেপালের শিক্ষার্থীরাই বেশি পড়তে আসেন। তবে দেশ দুটি মেডিকেলে পড়ালেখার খরচ কমিয়ে দিয়েছে। এর ফলে ওই দেশের শিক্ষার্থীরা সেখানেই ভর্তি হচ্ছেন।’

অধ্যাপক ডা. টিটো মিঞা

দ্বিতীয়ত, ‘বিদেশি শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এজেন্সির মাধ্যমে আমাদের দেশে পড়তে আসে। এসব এজেন্সিকে যে মেডিকেল কলেজগুলো বেশি কমিশন দেয় তারা তাদের ওখানে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করায়। কমিশন কম দিলে শিক্ষার্থী ভর্তি করায় না। এটিও একটি কারণ হতে পারে।’

অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল না থাকায় বিদেশে আমাদের দেশের এমবিবিএস ডিগ্রিকে আন্তর্জাতিক মানের ধরা হবে না এমন আশঙ্কা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি কমেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক টিটো মিঞা আরও বলেন, ‘আমরা অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল করেছি। আশা করছি জুনের পর থেকে আমাদের ডিগ্রির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি থাকবে। কাজেই বিদেশি শিক্ষার্থী কমার এই কারণটি একেবারেই তলানীতে রয়েছে।’

 

সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence