প্রচণ্ড গরমে শরীর ঠান্ডা রাখে যেসব খাবার
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ০৩:৪৬ PM , আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫, ০৯:০৪ PM

বাংলাদেশে এপ্রিল-মে মাসজুড়ে তাপমাত্রা প্রায়ই ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। এই প্রচণ্ড গরমে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়, যার ফলে দেখা দেয় পানিশূন্যতা, দুর্বলতা, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব ও ক্লান্তি। এমন অবস্থায় শরীরকে ঠাণ্ডা ও কর্মক্ষম রাখতে প্রয়োজন সঠিক খাদ্যাভ্যাস। বিশেষজ্ঞদের মতে, গরমে এমন কিছু খাবার খাওয়া জরুরি যা শরীরকে ভেতর থেকে ঠাণ্ডা রাখে এবং শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
যেসব খাবার শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে
তরমুজ ও শসা
তরমুজের ৯২ শতাংশই পানি, আর শসাতেও রয়েছে প্রচুর জলীয় উপাদান ও আঁশ। এ দুটি ফল শরীর ঠাণ্ডা রাখে এবং পানিশূন্যতা দূর করতে সহায়ক।
লাউ ও ঢ্যাঁড়স
লাউ সহজপাচ্য ও হজমে সহায়ক সবজি। গরমে লাউয়ের তরকারি, স্যুপ বা দইয়ের সঙ্গে রায়তা খাওয়া উপকারী। অন্যদিকে ঢ্যাঁড়স ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও ভালো। এটি শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করে।
দই ও মাঠা
ঠাণ্ডা টক দই প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ, যা হজমে সাহায্য করে এবং শরীরের তাপ কমায়। মাঠা ও ঘোল পান করলে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় থাকে।
ডাবের পানি
প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ ডাবের পানি শরীরকে দ্রুত হাইড্রেট করে এবং গরমের কষ্ট লাঘব করে।
পুদিনা ও প্রাকৃতিক হার্বস
পুদিনা শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা কমায়। পুদিনা পাতার শরবত, জিরাপানি বা চাটনি করে খাওয়া যায়। তোকমা দানা, গোলাপ জল, তুলসীপাতাও শরীর ঠাণ্ডা রাখতে কার্যকর।
মৌসুমি ফল
আম, জাম, বেল, লিচু, জামরুল, আনারস ও পেপে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এরা দেহের অতিরিক্ত উত্তাপ কমায়।
আরও পড়ুন: প্রতিদিন সাইকেল চালালে কমে মানসিক চাপ, বাড়ে আয়ু
যেসব অভ্যাস ও খাবার এড়িয়ে চলবেন
অতিরিক্ত ঝাল ও মসলা: মরিচ, গোলমরিচ, আদা, রসুনে থাকা উপাদান শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়।
গরু ও খাসির মাংস: হজমে বেশি সময় লাগায়, দেহে অতিরিক্ত তাপ সৃষ্টি করে।
ভাজাপোড়া ও ফাস্টফুড: অতিরিক্ত ক্যালরি শরীরে ‘মেটাবলিক ওভারলোড’ ঘটায়।
কড়া চা, কফি ও রাস্তার খোলা শরবত: শরীর ডিহাইড্রেট করে, সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
কৃত্রিম রঙ ও ফ্লেভারযুক্ত পানীয়: সাময়িক আরাম দিলেও শরীরের ক্ষতি করে।
গরমে সুস্থ থাকার কিছু পরামর্শ
দিনে অন্তত ১০-১২ গ্লাস পানি পান করুন।
প্রতি ১৫-২০ মিনিট পর এক কাপ পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
ছায়াযুক্ত ও ঠাণ্ডা স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।
হালকা, ঢিলেঢালা এবং হালকা রঙের পোশাক পরুন।
বাইরে গেলে ছাতা ও পানির বোতল সঙ্গে রাখুন।
উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ বা কিডনি রোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি পান করুন।
এই গ্রীষ্মে সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকতে হলে খাদ্যাভ্যাসে সচেতনতা জরুরি। প্রাকৃতিক, জলীয় এবং সহজপাচ্য খাবার শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে ও রোগ প্রতিরোধ করে। নিজের যত্ন নিন, পরিবারকেও সচেতন করুন।