যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২০ শতাংশ শুল্ক চুক্তি অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অর্জন: প্রেস সচিব
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১০ PM , আপডেট: ২৪ আগস্ট ২০২৫, ০১:৩৫ PM
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাম্প্রতিক ট্যারিফ আলোচনায় ২০ শতাংশ শুল্ক সুবিধা নিশ্চিত করাকে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম বড় কূটনৈতিক অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর ফার্মগেটের ডেইলি স্টার ভবনে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি বলেন, ‘এই চুক্তি ছিল সরকারের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ, কিন্তু সঠিক প্রস্তুতি ও আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করেছি।’
‘বাংলাদেশ ও ট্রাম্পের শুল্ক: বাণিজ্য ব্যবস্থা পরবর্তী বিশ্বের অর্থনৈতিক কূটনীতি’ শীর্ষক আলোচনাটির আয়োজন করে বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (ব্রেইন)। এতে অংশ নেন অধ্যাপক ড. রাশেদ আল তিতুমীর, অর্থনীতিবিদ জৌতি রহমান, জিয়া হাসানসহ আরও অনেকে।
শফিকুল আলম বলেন, ‘প্রথম থেকেই জানতাম, অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে আমাদের সময় সীমিত। তাই দ্রুত ফলদায়ী এবং বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্তেই মনোযোগ দিয়েছি। অনেকে ধারণা করেছিলেন আমরা দুর্বল, কিন্তু আমরা প্রমাণ করেছি—সঠিক নেতৃত্ব ও পরিকল্পনা থাকলে অল্প সময়েও বড় অর্জন সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট এবং যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ নীতি—দুই ক্ষেত্রেই আমরা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ি। বিশেষ করে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই একটি প্রতিবেশী দেশের গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়। তবে আমরা কূটনৈতিকভাবে তা সফলভাবে মোকাবিলা করি।’
চুক্তি সফল হওয়ার পেছনে তিনটি মূল শক্তিকে উল্লেখ করেন তিনি—প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের অভিজ্ঞতা, এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের বৈশ্বিক বাজার বিশ্লেষণ।
প্রেস সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন অনেক পণ্যে একটি বড় আমদানিকারক ও ভোক্তা দেশ—যেমন তুলা, তেল, পোল্ট্রি ফিড ও ভোজ্যতেল। এই অর্থনৈতিক বাস্তবতাকে আমরা আলোচনায় লেভারেজ হিসেবে কাজে লাগিয়েছি।’
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি দ্রুত বাড়ছে। তাই সরকারের কূটনৈতিক কৌশল এখন আরও বিস্তৃত ও বহুমুখী।
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই বন্দরকে যদি সিঙ্গাপুরের মত দক্ষ না করা যায়, তাহলে বিদেশি বিনিয়োগ টেকসইভাবে ধরে রাখা যাবে না।’
অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যদিও ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়নি, তবু গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী একটি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধিও ইতিবাচক সংকেত।’
প্রেস সচিব আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই ট্যারিফ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি নতুন সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে। তার মতে, “জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা ভিয়েতনামের মতো বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বাড়িয়ে উন্নয়নের নতুন পথে এগিয়ে যাবে।”