ঢাকার দুই সিটিকে এক করে বৃহত্তর মহানগরী গঠনের প্রস্তাব

লোগো
লোগো  © সংগৃহীত

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে (উত্তর ও দক্ষিণ) একীভূত করে একক মহানগর গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। একইসঙ্গে সমগ্র ঢাকা শহরকে ২০টি সিটি কাউন্সিলে ভাগ করার সুপারিশ করেছেন তারা। 

রবিবার (২০ এপ্রিল)  প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এমন সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। এর আগে, গত বছরের ১৮ নভেম্বর অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদকে প্রধান করে আট সদস্যের স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়।

কমিশনের প্রস্তাবনায় বলা হয়, একেকটি সিটি কাউন্সিল তার নিজস্ব ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে কাজ করবে, যা কতগুলো ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হবে। স্বায়ত্তশাসন থাকলেও এই সিটি কাউন্সিলগুলো কাজের দিক দিয়ে বৃহত্তর ঢাকা সিটি করপোরেশনের আওতায় একটি স্যাটেলাইট আকারে যুক্ত থাকবে এবং পরিচালিত হবে। প্রতিটি সিটি কাউন্সিলে একজন মেয়র থাকবেন।

এতে আরও বলা হয়, এ ব্যবস্থায় মেয়রের অধীনে ওয়াসা, রাজউক, তিতাস, ডিএমপি, ডেসা, ডিপিডিসিসহ সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাগুলোর কার্যক্রমের ওপর সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এতে মেয়রের ক্ষমতা বাড়বে এবং নগর সেবায় গতি আসবে বলে কমিশনের বিশ্বাস।

প্রস্তাবিত সিটি করপোরেশন কাঠামো: সিটি করপোরেশনের দুটি অংশ। একটি বিধানিক, অন্যটি নির্বাহী। বিধানিক অংশে থাকবেন নির্বাচিত কাউন্সিলররা, কাউন্সিল নেতা (মেয়র), ছায়া কাউন্সিল নেতা, সভাধ্যক্ষ, স্থায়ী কমিটি (৫-৭), সচিব, কাউন্সিল কর্মী। নির্বাহী অংশে থাকবেন মেয়র ও মেয়রস কাউন্সিল, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সিটি করপোরেশনের বিদ্যমান অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দপ্তর।

নির্বাচন যেভাবে: কাউন্সিলগুলোতে নির্ধারিত সংখ্যক ওয়ার্ড থাকবে। জনসংখ্যার ভিত্তিতে একটি সিটি কাউন্সিলে কমপক্ষে ৯টি থেকে সর্বোচ্চ ১৫টি ওয়ার্ড থাকবে। এই ওয়ার্ডগুলোয় ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন। এক-তৃতীয়াংশ ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন। প্রতিটি সিটি কাউন্সিলে নির্বাচিত কাউন্সিলররা নিজেদের ভোটে কাউন্সিলের মেয়র নির্বাচিত করবেন। আর সব সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলররা মহানগর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে ভোটার হিসেবে বিবেচিত হবেন। সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন উন্মুক্ত থাকবে। সেখানে নির্বাচিত কাউন্সিলর ও বাইরের অনির্বাচিত ব্যক্তিও নির্বাচনের শর্ত পূরণ করে মেয়র পদে প্রার্থী হতে পারবেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম  বলেন, ‘বর্তমান ব্যবস্থায় সিটি করপোরেশন কাঠামো ও কার্যাবলি পর্যাপ্ত নয়। এজন্য আমরা সিটি গভর্নমেন্টে গুরুত্ব দিয়েছি। লন্ডনে যেমন সিটি গভর্নমেন্ট রয়েছে। প্রস্তাবনা বাস্তবায়িত হলে মেয়রের ক্ষমতা বাড়বে। অন্যান্য সেবা সংস্থায় মেয়রের কর্তৃত্ব বাড়ানোর চিন্তা করা হয়েছে। এতে করপোরেশনের সেবা সংস্থাগুলোর কাজে সমন্বয় হবে এবং কাজ ত্বরান্বিত হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ