চুন ছাড়াই সহজে ভুঁড়ি পরিষ্কার করার উপায়
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৫, ০১:৫১ PM , আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৫, ০৬:১১ PM

গরু বা খাসির ভুঁড়ি—যা অনেকেই বট নামেও চেনেন—ভোজনরসিক বাঙালির কাছে অত্যন্ত প্রিয় একটি পদ। ঝাল-মসলাদার এই খাবারের স্বাদ যেমন অসাধারণ, তেমনি এর পুষ্টিগুণও কম নয়। আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, সেলেনিয়ামসহ নানা উপকারী উপাদান মেলে ভুঁড়িতে।
তবে যতটা সহজ খাওয়া, পরিষ্কার করা ঠিক ততটাই কঠিন। বিশেষ করে কোরবানির সময় এ নিয়ে অনেকে ভোগেন বিরাট ঝামেলায়। অনেকেই দ্রুত পরিষ্কারের জন্য চুন ব্যবহার করেন, যা স্বাদ নষ্ট করে ফেলে। অথচ চুন ছাড়াও পরিষ্কার করা যায় সহজেই। চলুন জেনে নেওয়া যাক দুটি কার্যকর ও সহজ পদ্ধতি।
পদ্ধতি ১: গরম পানির সাহায্যে পরিষ্কার
১. ভুঁড়ি ছোট ছোট টুকরো করে কাটুন।
২. একটি হাঁড়িতে পানি গরম করুন।
৩. প্রতিটি টুকরো আলাদা করে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
4. গরম পানির কিছু অংশ আলাদা একটি পাত্রে নিন।
৫. এতে ভুঁড়ির কালচে দিক ১২–১৩ সেকেন্ড চুবিয়ে রাখুন।
>সাবধান: বেশি সময় গরম পানিতে রাখলে ময়লা আরও শক্ত হয়ে যেতে পারে।
৬. একটি চামচ দিয়ে ভুঁড়ির এক পাশ চেপে ধরে, আরেকটি চামচ দিয়ে আঁচড়ে ময়লা তুলে ফেলুন।
৭. খাঁজকাটা অংশ কিছুটা বেশি সময় গরম পানিতে রেখে পরিষ্কার করুন।
৮. ময়লা উঠলে প্রতিটি টুকরো ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
৯. এবার একটি হাঁড়িতে পর্যাপ্ত পানি নিয়ে তাতে ১ থেকে দেড় চামচ হলুদ মেশান।
১০. ভুঁড়ি দিয়ে ভালোভাবে সেদ্ধ করুন।
পদ্ধতি ২: গ্লাভস ও হলুদের সাহায্যে পরিষ্কার
১. ভুঁড়িকে বড় বড় কয়েকটি টুকরো করুন।
২. গরম পানিতে এগুলো চুবিয়ে নরম করে নিন।
৩. গ্লাভস পরে চামচ দিয়ে ঘষে ময়লা তুলে ফেলুন।
৪. এবার আবার গরম পানি করুন, তাতে ১ চামচ হলুদের গুঁড়ো দিন।
৫. বলক আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
৬. ১৫–২০ মিনিট পর তেল ও ময়লা ভেসে উঠলে ছাঁকনি দিয়ে তুলে ফেলুন।
৭. ভুঁড়ি গরম থাকা অবস্থায় চামচ দিয়ে আঁচড়ে বাকি ময়লা তুলে ফেলুন।
৮. পাতলা চামড়ার আবরণও সরিয়ে ফেলুন।
৯. এরপর পছন্দমতো রান্নার জন্য সেদ্ধ করে নিন।
ভুঁড়ির পুষ্টিগুণ
১০০ গ্রাম ভুঁড়িতে থাকে প্রায়:
* ৪ গ্রাম ফ্যাট
* ১৫৭ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল
* প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, আয়রন ও ক্যালসিয়াম
এই উপাদানগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও হাড়ের গঠন মজবুত করতে সহায়তা করে।
ভুঁড়ি খাওয়ার সময় সতর্কতা
* হার্টের রোগীদের জন্য দিনে ২০০ মি.গ্রাম এবং সুস্থ মানুষের জন্য ৩০০ মি.গ্রাম কোলেস্টেরল গ্রহণ নিরাপদ।
* মাত্র ১০০ গ্রাম ভুঁড়িই একজন রোগীর দৈনিক কোলেস্টেরলের প্রায় ৭৯% পূরণ করে ফেলতে পারে।
* এতে স্যাচুরেটেড ও ট্রান্স ফ্যাটও থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
তাই চিকিৎসকের পরামর্শ থাকলে ভুঁড়ি এড়িয়ে চলাই ভালো।