প্রেসিডেন্টের পাঠানো বিশেষ বিমানে আজ চীন যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

ড. মুহাম্মদ ইউনূস
ড. মুহাম্মদ ইউনূস  © সংগৃহীত

চার দিনের সফরে চীন যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (২৬ মার্চ) চীনের প্রেসিডেন্টের পাঠানো বিশেষ বিমানে দেশটিতে যাবেন তিনি।  এ সফরের মাধ্যমে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। মঙ্গলবার  (২৫ মার্চ) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা জানান। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামীকাল চারদিনের সফরে আমি চীন যাচ্ছি। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে আমার বৈঠক হবে। চীনের বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সিইওদের সঙ্গেও বৈঠক করব। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ চাইনিজ সোলার প্যানেল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লংজি বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের আগ্রহ জানিয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করছি।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘এছাড়া প্রযুক্তিগত সহায়তা, মেডিকেল সহায়তা, স্বল্পমূল্যে চিকিৎসাসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হবে। তারা আমাদের দেশ থেকে আম, কাঁঠাল ও পেয়ারা আমদানি করতে চায়। এটা খুব দ্রুতই শুরু হবে। এই সফরের মধ্য দিয়ে আমাদের দু'দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতর হবে।’ 

বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া এ সরকারের লক্ষ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্যে আমরা আসিয়ানের সদস্য হিসেবে যোগদান করার বিষয়ে আগ্রহের কথা জানিয়েছি। এ বছরের শুরু থেকে মালয়েশিয়া আসিয়ানের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। মালয়েশিয়ার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। তিনি আমাদের আবেদনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, আমাকে মালয়েশিয়া সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমি এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছি।’

অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান বলেন, ‘মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য জাতিসংঘের সম্মেলন আয়োজনের দায়িত্ব নিয়েছে। আমাদের দেশ থেকে শ্রমিক নিয়ে যাবার ব্যাপারে যে সমস্ত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল সবগুলো সমাধানের জন্য আন্তরিকভাবে তারা কাজ করছে।’

বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান মিলে যৌথ অর্থনীতির গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি বরাবরই বলে এসেছি, আমরা মহা সৌভাগ্যবান এক জাতি, পৃথিবীর মানচিত্রে আমাদের অবস্থানের কারণে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান-দক্ষিণ এশিয়ার এই চারটি দেশ মিলে একটি যৌথ অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারলে চার দেশই লাভবান হবে। নেপাল ও ভূটান আমাদের জলবিদ্যুৎ দিতে অত্যন্ত আগ্রহী, আমরাও নিতে আগ্রহী। বাংলাদেশের শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলতে এর কোনো বিকল্প নেই।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের রয়েছে এক বিস্তীর্ণ মহাসাগর। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে আমাদের সামনে বিরাট অর্থনৈতিক সুযোগ এনে দিয়েছে। কুমিরা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত দীর্ঘ উপকূল ভূমি। এই দীর্ঘ উপকূলজুড়ে বিরামহীনভাবে অনেকগুলি আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ আন্তর্জাতিক মানের সমুদ্র বন্দর, শিল্প কারখানা, রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা স্থাপন করা গেলে পুরো অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভবিষ্যৎ দ্রুত পরিবর্তন সম্ভব।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আনতে পারলে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা কমবে। বর্তমানে বিশ্ববাসী পরিবেশ রক্ষায় সচেতন। তারা এটাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে পরিবেশবান্ধব বিকল্প পাওয়া গেলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করা যাবে।’

দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ যথাসময়ে শেষ করার বিষয়ে সরকার জোর দিচ্ছে জানিয়ে  ড. ইউনূস বলেন, ‘রোসাটমের মহাপরিচালক আমাকে বলেছেন, শিগগির বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের পণ্য, পৃথিবীর পণ্য। এই পণ্য নেপালে যাবে, ভুটানে যাবে, ভারতের সেভেন সিস্টার্সে যাবে। প্রতিবেশীদের পণ্য আমাদের এখানে আসবে, সারা পৃথিবীর কাছে পৌঁছে যাবে, এভাবেই এটি একটি লাভজনক অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবে। আর এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবে বাংলাদেশ।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence