প্রাইভেট জেট ও এক হাজার হীরায় তৈরি ৬১ কোটি টাকার মুকুটসহ যা যা পাচ্ছেন মিস ইউনিভার্স ফাতিমা

ফাতিমা বশ
ফাতিমা বশ  © সংগৃহীত

বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সুন্দরী প্রতিযোগিতা ‘মিস ইউনিভার্স’ এর ৭৪তম আসরের মুকুট জিতেছেন ‘মিস মেক্সিকো’ ফাতিমা বশ (২৫)। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চূড়ান্ত পর্বে তার নাম ঘোষণা করা হয়। তাকে মুকুট পরিয়ে দেন গত বছরের বিজয়ী ভিক্টোরিয়া কিয়ের থিলভিগ। 

বিজয়ী হয়ে কী কী পাচ্ছেন ফাতিমা? 

নতুন ‘মিস ইউনিভার্স’ ফাতিমাকে কত টাকা দেওয়া হবে, তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেনি মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ। তবে বিজয়ীকে সচরাচর এক বছরের বেতন হিসেবে নগদ আড়াই লাখ ডলারের চেক দেওয়া হয়, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ কোটির মতো। গতবারের বিজয়ী ভিক্টোরিয়া কিয়ের থিলভিগকেও ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া এক হাজার হীরা এবং নীলকান্তমণি দিয়ে সজ্জিত ‘ফোর্স ফর গুড’ নামের যে মুকুট ফাতিমার মাথায় উঠেছে সেটির আর্থিক মূল্য ৫০ লাখ ডলার (৬১ কোটি টাকার মতো)। 

নগদ অর্থের বাইরে নিউইয়র্ক সিটিতে একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টও পাবেন ফাতিমা। মিস ইউনিভার্সের বিজয়ীকে এক বছর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি মিস ইউনিভার্স সংগঠনের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে থাকতে দেওয়া হয়। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের মিস ইউনিভার্সের বিজয়ীরা সেখানে পাকাপাকিভাবে থাকার সুযোগ পান। এছাড়া  বিশ্বভ্রমণের জন্য বিজয়ীকে একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ (প্রাইভেট জেট) দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তিনি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে ঘুরে বেড়াতে পারেন। প্রতিটি সফরের হোটেল খরচ, খাওয়া, ফটোশুট বা প্রেস মিটিংয়ের সমস্ত আয়োজন করে মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ। 

তবে শর্ত থাকে যে যেখানেই যান না কেন, মিস ইউনিভার্সের পক্ষ থেকে কিছু দাতব্য কাজে অংশ নিতে হবে। এর বাইরে মিস ইউনিভার্সের বিজয়ী ব্যক্তিগতভাবে কোনো কনসার্ট, ইভেন্ট, ফ্যাশন শো, অ্যাওয়ার্ড শো, পার্টি বা সিনেমার প্রদর্শনীতে যেতে চাইলেও মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষ সব ব্যবস্থা করে দেয়।

ফাইনালে যে দুই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে মিস ইউনিভার্স হলেন ফাতিমা বশ?

মিস ইউনিভার্সের ফাইনালে সেরা পাঁচের সবাইকে দুটি করে প্রশ্ন করা হয়। একটি প্রশ্ন স্বতন্ত্র, অর্থাৎ পাঁচজনকে পাঁচটি আলাদা প্রশ্ন করা হয়। আরেকটি কমন প্রশ্ন ছিল সবার জন্য ছিল একই প্রশ্ন। কমন প্রশ্নটি করার সময় চারজনের কানে ছিল হেডফোন, যাতে তাঁরা কিছু শুনতে না পান।

প্রথম প্রশ্ন:
২০২৫ সালে আপনার দৃষ্টিতে নারীর চ্যালেঞ্জগুলো কী এবং কীভাবে আপনি মিস ইউনিভার্স খেতাব ব্যবহার করে বিশ্বের নারীদের জন্য নিরাপদ স্থান তৈরি করবেন?

উত্তরে ফাতিমা বলেন, নারীদের জন্য পৃথিবীটা এখন চ্যালেঞ্জের। একজন নারী ও মিস ইউনিভার্স হিসেবে অন্যের কল্যাণে আমার বক্তব্য এবং শক্তি কাজে লাগাব; কেননা এখন আমরা এখানে এসেছি কথা বলার জন্য, পরিবর্তনের জন্য এবং আমাদের সবই আছে। আমরা নারী, আমরা সাহসী—আমরা সবার সামনে দাঁড়িয়ে ইতিহাস গড়তে জানি।

দ্বিতীয় প্রশ্ন (কমন):
আজ আপনি মিস ইউনিভার্স ২০২৫ নির্বাচিত হলে এই প্ল্যাটফর্মকে কীভাবে তরুণীদের ক্ষমতায়নের জন্য ব্যবহার করবেন?

ফাতিমার উত্তর: মিস ইউনিভার্স হিসেবে বলব, নিজের স্বকীয়তার শক্তিতে আস্থা রাখো। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখো। তোমার স্বপ্নের মূল্য আছে। তোমার হৃদয় অমূল্য। তোমার মূল্য সম্পর্কে অন্য কেউ যেন সন্দিহান না হয়; কারণ, তুমি মূল্যবান। আর বলব, তুমি শক্তিশালী আর তোমার কণ্ঠস্বর সবার কানে পৌঁছে যাক।

কে এই ফাতিমা বশ?

মেক্সিকোর তাবাস্কো অঙ্গরাজ্যের সান্তিয়াগো দে তেয়াপায় জন্ম ফাতিমার। ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। কিছু সময় তিনি ইতালির মিলান ও যুক্তরাষ্ট্রের ভারমন্টেও কাটিয়েছেন।

শৈশবে ডিসলেক্সিয়া ও এডিএইচডির কারণে বুলিংয়ের শিকার হওয়ার কথা তিনি খোলাখুলিভাবে বলেছেন বহুবার। সেই দুর্বলতাকেই শক্তি হিসেবে কাজে লাগিয়েই এগিয়ে গেছেন ফাতিমা। তার সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার পথচলা শুরু হয় ২০১৮ সালে তাবাস্কোতে ‘ফ্লোর ডি ওরো’ খেতাব জয়ের মাধ্যমে।

২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে তাবাস্কোর প্রথম নারী হিসেবে তিনি জেতেন ‘মিস ইউনিভার্স মেক্সিকো’ খেতাব। এই জয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়তে থাকে। ইনস্টাগ্রামে তার অনুসারী সংখ্যা ছাড়ায় ৯ লাখ ৯০ হাজার, আর টিকটকে ৬ লাখ ৯০ হাজার।


সর্বশেষ সংবাদ