নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে নোয়াখালী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
- আব্দুল কবীর ফারহান
- প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২০, ০৭:১৫ PM , আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০, ১১:৩০ AM
চুরি, ডাকাতিসহ অপরাধ প্রতিরোধে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। ফলে প্রত্যেক ছুটিতেই দূর্বৃত্তরা এই ক্যাম্পাসে আঘাত হানছে। চুরি-ডাকাতি, বিভিন্ন দপ্তরে হামলাসহ ক্যাম্পাসে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। এতে হল সমূহে প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান জিনিসপত্র রেখে যাওয়ার ফলে চরম শঙ্কা ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুর্বৃত্তায়ন ঠেকাতে ক্যাম্পাসের মূল ফটক থেকে শুরু করে প্রশাসনিক ও লাইব্রেরি ভবনসহ প্রত্যেকটি একাডেমিক ভবন সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু জায়গা ছাড়া বাকি সব গুরুত্বপূর্ণ ভবন এবং এলাকায় সিসি ক্যামেরা নেই। ফলে ধ্বংসযজ্ঞ কর্ম পরিচালনার জন্য নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে উপযুক্ত বলে মনে করছেন তারা।
প্ল্যানিং, ডেভালপমেন্ট এন্ড ওয়ার্কার্স বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপাচার্যের কার্যালয়ের সাথে সংযুক্ত করে প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটক পর্যন্ত, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল সম্পূর্ণ এবং সাবেক স্পীকার আব্দুল মালেক উকিল হল এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
সূত্র জানায়, লাইব্রেরী ভবনের শুধুমাত্র লাইব্রেরী কক্ষে নিরাপত্তারস্বার্থে তারা নিজস্ব অর্থায়নে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে। এছাড়া আরও দু’একটি বিভাগের শুধুমাত্র অফিস কক্ষ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে বিভাগ কর্তৃক এইসব ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে সিসি ক্যামেরার বাইরে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দপ্তর ব্যতীত সম্পূর্ণ প্রশাসনিক ভবন। এই ভবনটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়, রেজিস্ট্রার দপ্তর এবং অর্থ বিভাগসহ প্রশাসনিক সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় সমূহ থাকলেও এই ভবনকে এখনো পর্যন্ত সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়নি।
এছাড়া প্রক্টর অফিস, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের দপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কয়েকটি দপ্তর থাকা সম্পূর্ণ অডিটোরিয়াম ভবন এখনো সিসি ক্যামেরার বাইরে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি একাডেমিক ভবনসহ বাকি হল সমূহও রয়েছে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থার বাইরে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস সংকটকালীন এই ছুটিতেও প্রক্টর অফিস সংযুক্ত নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বিগত কয়েক বছর ধরে বিশেষ করে বিভিন্ন ছুটির সময়গুলোতে হল থেকে টেলিভিশন চুরি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে ট্রান্সফরমার চুরিসহ নিয়মিত কয়েকটি চুরির ঘটনার সাক্ষী বিশ্ববিদ্যালয়টি।
সিসি ক্যামেরা না থাকায় এসব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা যায়নি। ভিন্ন ঘটনায় নিরাপত্তা প্রহরীর মাধ্যমে এসব ঘটনার সাথে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর জড়িত থাকার কথা জানলেও পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ না থাকায় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থাও নিতে পারেনি। এছাড়া দু’একজন অপরাধী শনাক্ত হওয়ায় তাদেরকে যথাযথ বিচারের আওতায় আনা হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, ইতোমধ্যে আমরা এসব অপরাধ কিছুটা কমিয়ে আনতে পেরেছি। এগুলো সাধারণত বন্ধের সময় ঘটে থাকলেও করোনার আগের ছুটিতে এমন কিছু ঘটেনি। সেসময়ে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, এখন কিন্তু সাধারণ ছুটি নয়, করোনা মোকাবেলায় এই ছুটি হওয়াতে অন্য সময়ের ছুটি থেকে এটা একটু ভিন্ন। ভাইরাস সংক্রমণের ভীতি থাকায় নিরাপত্তা কর্মীরাও সবদিকে ঠিক মত দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। সেজন্য দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে। আমরা অতিদ্রুত সম্পূর্ণ ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করবো।