কুবি শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে নোবিপ্রবিতে মানববন্ধন

মানববন্ধনে উপস্থিত নোবিপ্রবির সংবাদকর্মীরা
মানববন্ধনে উপস্থিত নোবিপ্রবির সংবাদকর্মীরা  © টিডিসি ফটো

সংবাদ প্রকাশের জেরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও দৈনিক যায়যায়দিনের ক্যাম্পাস প্রতিনিধিকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সংবাদিকরা। 

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের মুল ফটকের পাশে শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।  

এ সময় নিউজ ২৪ এর জেলা প্রতিনিধি আকবর হোসেন সোহাগ, নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আব্দুল কবীর ফারহান,  সাধারণ সম্পাদক এস আহমেদ ফাহিম,  সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাইনুদ্দিন পাঠান, নোবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার নাসের। এ ছাড়াও নোবিপ্রবিতে দায়িত্বরত ক্যাম্পাস প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।  

মানববন্ধনে সাংবাদিকরা বলেন, সংবাদপত্র হলো সমাজ ও রাষ্ট্রের দর্পণ। সাংবাদিকরা হলেন জাতির বিবেক। সাংবাদিকতা কোনো জাতির চিন্তা-চেতনার শৈলী ও সুপ্ত মন-মানসিকতা তৈরিতে কতটুকু ভূমিকা পালন করে, তা আমাদের সবার কাছে স্পষ্ট।  সৎ সাংবাদিকের কোনো দেশ কাল পাত্র নেই। সাংবাদিকদের অন্যতম দায়িত্ব হলো সৎ, সত্যনিষ্ঠ, পক্ষপাতমুক্ত সাংবাদিকতা। সংবাদপত্রকে প্রমাণ করতে হবে কারো প্রতি পক্ষপাত নেই, কারো বিরুদ্ধে বা কারো পক্ষে কোনো এজেন্ডা নেই। বস্তুনিষ্ঠ ও সৎ সাংবাদিকতা একটি বিধ্বস্ত জাতিকে পুনর্গঠনে অবদান রাখতে পারে। 

কিন্তু বর্তমানে সামাজিক অনাচার ও বৈপরিত্যের বিরুদ্ধে সাংবাদিকতা একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা। এমন ই একটি ঘটনা দেখতে পাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। গত ৩১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নবীনবরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন দুর্নীতি নিয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেন। পরে তাঁর বক্তব্য উদ্ধৃত করে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। 

গত ২ আগস্ট কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অফিস আদেশে দেখা যায়, উপাচার্যের বক্তব্যকে ‘বিকৃত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা তথ্য প্রচারে’র অভিযোগের সংশ্লিষ্ট সংবাদকর্মী রুদ্র ইকবালকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু বহিষ্কারের আগে রুদ্র ইকবালের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি৷ যেটা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের বহিঃপ্রকাশ।

নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাইনুদ্দিন পাঠান বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি দুর্নীতির পক্ষে বক্তব্য দেওয়া মানে তিনি দুর্নীতি করাকে উৎসাহিত করেছেন। যেটি দেশের আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। সেই বক্তব্যের জন্য তার জাতির সামনে ক্ষমা চাওয়া উচিত। এটি না করে বরং তিনি একজন সাংবাদিককে কোন ধরনের আইনের তোয়াক্কা না করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছেন। যা কোন বিচারেই যুক্তিযুক্ত নয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আবদুল মঈনকে জাতির সামনে দুঃখপ্রকাশ এবং ক্ষমা  চেয়ে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক রুদ্র ইকবালের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান রইলো। না হয় আম রাখা সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সাংবাদিক সংগঠনগুলো একসাথে আন্দোলন করবো। 

নোবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার নাসের বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রতিনিধ উপাচার্যের বক্তব্য হুবহু কোট করে সংবাদ প্রকাশ করায় রুদ্র ইকবালকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বহিষ্কার করা হয়। আমরা নোবিপ্রবি সাংবাদিক কর্মীরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। পাশাপাশি বহিষ্কার প্রত্যাহার করে তাকে ক্যাম্পাসে সাংবাদিকতা করার সুস্থ পরিবেশ দেওয়ার জোর দাবি জানাই। 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দ্রুত পদত্যাগ করে এই পদটিকে কলঙ্কমুক্ত করার দাবী জানিয়েছেন নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আব্দুল কবীর ফারহান। তিনি বলেন, একজন সাংবাদিকের শিক্ষা জীবনে হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকার আপনি রাখেন না। বিশ্ববিদ্যালয় আপনার পৈত্রিক সম্পত্তি নয়৷ অবিলম্বে এই আইনবহির্ভূত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তথ্য অধিকার ক্ষুন্ন করার জন্য তিনি উপাচার্যকে সাংবাদিকদের নিকট ক্ষমা প্রার্থনার আহবান জানিয়েছেন।

নিউজ ২৪ এর নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি আকবর হোসেন সোহাগ বলেন, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে কুবি ভিসি দেশের আইন না মেনে একজন সাংবাদিককে প্রশাসনিক শাস্তির মুখোমুখি করার নিকৃষ্টতম নজীর স্থাপন করলেন। আপনার এই হীনকর্ম স্বাধীন সাংবাদিকতার অন্তঃরায়। আপনার প্রতি আমার অনুরোধ রইলো আপনার ভুল স্বীকার করে এবং  ক্ষমা চেয়ে শীঘ্রই রুদ্র  ইকবালের বহিষ্কার প্রত্যাহার করে তাকে ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence