নির্মাণের সাড়ে তিনবছর পর উদ্বোধন হলো চুয়েটের টিএসসি’র ক্যাফেটেরিয়া
- মো. গোলাম রব্বানী
- প্রকাশ: ২২ মে ২০২৩, ১০:২০ AM , আপডেট: ২২ মে ২০২৩, ১০:৪৭ AM
চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ও ক্যাফেটেরিয়ার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে। এরপর নানান জটিলতা, বাজেট সংকট, টিএসসির যাবতীয় সরঞ্জামাদি এবং আসবাবপত্রের ব্যবস্থা না হওয়ার কারণে কার্যক্রম শুরু হয়ে উঠছিল না। এরপর করোনা মহামারীর প্রায় দেড় বছর কেটে গেছে।
ধাপে ধাপে আসবাবপত্র এবং অসম্পূর্ণ কাজগুলোতে কার্যক্রম শুরু করা হয়। যাতে অতি শীঘ্রই তা ছাত্র-শিক্ষকসহ সকলের জন্য উন্মুক্ত করা যায়। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার প্রায় ৩ বছর পর ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে টিএসসি আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হলেও বন্ধ ছিলো ক্যাফেটেরিয়া। ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের কার্যালয়, চুয়েট মেডিকেল সহায়তা কেন্দ্র, চুয়েট এলানাই এসোসিয়েশন সহ কয়েকটি সংগঠনের কার্যালয় যাত্রা শুরু করে নান্দনিক সৌন্দর্যের এই ভবনে।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর রোববার (২১ মে) দুপুরে চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম ক্যাফেটেরিয়া-১ এর উদ্বোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. শেখ মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির সহ বিভিন্ন বিভাগের ডীনগণ, শিক্ষক,শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী বৃন্দ।
শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া:
তবে ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের দাম ও গুণগত মান নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকে। দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্ব গতির কারণে খাবারের দামে একটি নির্দিষ্ট মূল্য তালিকা প্রদান করেছে ক্যাফেটেরিয়া কর্তৃপক্ষ। খাবারের গুণগত মান ও প্রকারভেদ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম নগরীর স্বনামধন্য রেস্টুরেন্টে হোটেল জামানের বরাত দিয়ে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক জানান, ক্যাটারিং এর দায়িত্বে থাকা হোটেল জামান খাবারের গুণগত মান ও সুস্বাদু খাবারের নিশ্চয়তা দিয়েছে। তারা প্রচলিত খাবারের বাইরেও পরিবেশনায় নতুন চিন্তা করবে।
তবে চালু হবার পরে খাবারের পরিমাণ ও গুনগত মান বিবেচনা করে দাম পুনর্নির্ধারণ করা হতে পারে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক। ক্যাফেটেরিয়াতে ভর্তুকির প্রসঙ্গে তিনি বলেন,"আমরা চেষ্টা করবো বিষয়টি নিয়ে,তবে এটি সরকারি প্রক্রিয়া। ইউজিসি কে জানানো হয়েছে। এবং বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। "
পুরোদমে কাজে আসতে যুগ পেরিয়েছে চুয়েটের টিএসসি
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র মতে, চুয়েটের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০০৭ সালে ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। নির্মাণের জন্য প্রথম ধাপে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সে অর্থ দিয়ে ভবনের ভিত্তিকাঠামো নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এরপর প্রকল্পের জন্য আর কোনো বরাদ্দ না আসায় নির্মাণকাজ আর এগোয়নি। সেসময় সংবাদমাধ্যমে এটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এরপর আংশিক বাজেট এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন চুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অর্থায়নে ভবনটির নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু হয়। নির্মাণকাজ একতলা পর্যন্ত সম্পন্ন করার জন্য সংগঠনটি প্রায় অর্ধ কোটি সমপরিমাণ টাকা অর্থায়ন করে।এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, প্রথম ধাপে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় প্রকল্পটি শুরু হয়।
কিন্তু ১ কোটি ১০ লাখ টাকার কাজ শেষ হওয়ার পর অধিদপ্তর থেকে আর কোনো টাকা আসেনি। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরকে প্রকল্পটি হস্তান্তর করা হয়। এরপর নানান জটিলতা পর ২০১৯ সালের শুরু দিকে টিএসসির নির্মাণকাজ শেষ হয়।এরপর ভবনটি কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করে চুয়েটের প্রকৌশল দপ্তর।
কি কি থাকছে টিএসসিতে
১৭ হাজার বর্গফুট আয়তনের এই ভবন নির্মাণে মোট ব্যয় হয় প্রায় ১১ কোটি টাকা। পূর্ব পাশের তিনতলা অংশের নিচতলায় শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ক্যাফেটেরিয়া-১, ২য় তলায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ক্যাফেটেরিয়া-২ এবং ৩য় তলায় কনফারেন্স কর্নার।
পশ্চিম পাশের ভবনের নিচ তলায় থাকবে ষ্টেশনারী দোকান। ২য় তলা বরাদ্দ হয়েছে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের নতুন কার্যালয়। ৩য় তলায় অবস্থিত কক্ষগুলোতে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনগুলোর অফিস হিসেবে বরাদ্দের প্রস্তুতি চলছে। ৪র্থ তলায় থাকছে চুয়েট মেডিকেল সহায়তা কেন্দ্র এবং এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন চুয়েট’র দপ্তর।