আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার হলেন মায়া ও কামরুল

 মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম  © সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এবং অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি। আজ সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) আওয়ামী লীগে দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা গত ২০ ও ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম এবং অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পদে মনোনয়ন প্রদান করেছেন।

আরও পড়ুন: ফেসবুকে ‘ক্ষমা’ লিখে আত্মহত্যা ঢাবি ছাত্রের

এর আগে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছিলেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ কামারুজ্জামানের ছেলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

গত বছর করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু। এর আগে ২০২০ সালের ১৩ জুনে মারা যান দলটির সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। ওই বছরের ১০ জুলাই মারা যান দলটির সভাপতিমণ্ডলীর অপর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন।

এতে শূন্য হয় সভাপতিমণ্ডলীর তিনটি পদ। শূন্য পদেই দায়িত্ব পেলেন তারা। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দলটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৯ জনের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলী।

আরও পড়ুন: সহসাই কেটে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অচলাবস্থা

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীরবিক্রম, এমপি ১৯৪৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুরের সম্ভ্রান্ত চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা-মরহুম আলী আহসান মিয়া, মাতা-মরহুমা মোসা: আক্তারুন্নেছা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইসলামের ইতিহাসে এমএ পাশ করে পরে এলএলবি ডিগ্রী অর্জন করেন। সঙ্গীত পিপাসু মায়া চৌধুরী মিউজিক কলেজ থেকে আই মিউজিক পাশ করেন। জনাব চৌধুরী ১৯৬৫ সালে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। তৎকালিন পাকিস্তান আমলে তিনি বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি যুদ্ধকালীন ২ নং সেক্টরের ক্র্যাক প্লাটুনের কমান্ডার হিসেবে বীরত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি ‘বীরবিক্রম’ খেতাব লাভ করেন। জনাব চৌধুরী ১৯৭২ সালে ঢাকা মহানগর আওয়ামীলীগের একজন একনিষ্ঠ নির্ভীক কর্মী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। 

এদিকে, ১৯৫০ সালের ১ জুন ঢাকার লালবাগে জন্মগ্রহণ করা কামরুল ইসলাম বর্তমানে খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগের সংসদে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। এছাড়া ওই সংসদে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্যও ছিলেন তিনি।

প্রিন্সিপাল হাকিম খোরশেদুল ইসলাম এবং মাতা হালিমা খাতুন চৌধুরীর সন্তান কামরুল ইসলাম ইসলাম চার ভাই ছয় বোনের মধ্যে সপ্তম। ১৯৬৫ সালে ঢাকার আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন এবং ১৯৬৭ সালে গভর্নমেন্ট ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে স্নাতক শেষ করেন।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থী মারধরের ঘটনায় বাস চালক আটক, সহকারী পলাতক 

এরপর ১৯৮২ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন শাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ঢাকা বারে যোগদানের মাধ্যমে আইন পেশা শুরু করেন কামরুল ইসলাম। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন।

১৯৯৬-২০০১ সালে কামরুল ইসলাম ঢাকার পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জেলখানায় জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলা এবং ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেন পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় আইনজীবী হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও জেলখানায় জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলার বিষয়বস্তু ল’জার্নালে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

রাজনীতিতে কামরুল ইসলামের বিচরণ ষাটের দশকে। ১৯৬৯ এ ঢাকা নগর ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে তিনি বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা ও ১১ দফা ভিত্তিক গণআন্দোলনে অংশ নেন। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

 


সর্বশেষ সংবাদ