এনটিআরসিএর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগে অনিশ্চয়তা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫১ AM , আপডেট: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ০১:৩৯ PM
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা আনতে দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা চলছিল। সেই প্রক্রিয়ায় নিয়োগের দায়িত্ব বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি চললেও নিয়মিত সচিব না থাকায় সেই উদ্যোগ এখন অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মাধ্যমিক-২ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এনটিআরসিএর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সচিব পদে স্থায়ী কেউ না থাকায় সেটি আর হয়ে ওঠেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মো. মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এনটিআরসিএর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ নিয়ে আমাদের একটি সভা হওয়ার কথা ছিল। তবে সিনিয়র সচিব প্রত্যাহার হওয়ায় সেই সভা করা সম্ভব হয়নি। নিয়মিত সচিব আসার পর এ বিষয়ে সভা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বর্তমানে বেসরকারি স্কুল-কলেজে প্রধান শিক্ষক বা সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয় ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে। এতে স্বজনপ্রীতি, পক্ষপাত কিংবা আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ প্রায় নিয়মিত শোনা যায়। অনেকেই মনে করেন, এসব অভিযোগের পেছনে মূলত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে।
পড়ালেখা শেষ করে নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করা অনেক তরুণ শিক্ষকই চান, যেন নিরপেক্ষ একটি প্রক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ অন্যান্য পদে নিয়োগ হয়। কিন্তু তারা হতাশ— গুরুত্বপূর্ণ এসব পদে এখনও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়নি। এনটিআরসিএর মাধ্যমে এসব পদে নিয়োগের উদ্যোগে তারা আশার আলো দেখেছিলেন।
তবে এখন সেই আলো মলিন হয়ে আসছে। কবে নাগাদ সভা হবে, কবে সিদ্ধান্ত হবে, আর কবে বাস্তবায়ন হবে—তা কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারছেন না।
একজন নিবন্ধিত শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের প্রধান হওয়ার মতো পদগুলো এখনো ম্যানেজিং কমিটির হাতে। সেখানে গেলে অর্থ আর প্রভাবই মুখ্য হয়ে ওঠে। এনটিআরসিএ দায়িত্ব নিলে অন্তত একটা স্বচ্ছতার আশা ছিল, কিন্তু সেটাও থমকে গেছে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান পদে যাদের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা, সেই নিয়োগ যদি প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তাহলে গোটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।অথচ শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন যোগ্য নেতৃত্ব, সঠিক মানুষকে সঠিক স্থানে বসানো। সে চেষ্টার যে ক্ষীণ আশার সেতু তৈরি হয়েছিল, সেটিই আপাতত ঠান্ডাঘরে।