দেশের প্রথম ‘স্মার্ট ইনোভেশনস’ স্কুলের যাত্রা শুরু

স্মার্ট ইনোভেশনস স্কুলের ভিতরের অংশ
স্মার্ট ইনোভেশনস স্কুলের ভিতরের অংশ   © ফাইল ফটো

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) ডিজাইনে রাজধানীর গুলশানে চালু হচ্ছে বিশ্বখ্যাত স্টিম (এসটিইএএম) কারিকুলামভিত্তিক ‘স্মার্ট ইনোভেশনস স্কুল’। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী মাস থেকে ‘হোয়ার এডুকেশন মিটস দ্য ফিউচার’ নীতিতে নতুন ধারার এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পুরোদমে চালু হবে।

স্টিম কারিকুলামে বিজ্ঞান (এস), প্রযুক্তি (টি), প্রকৌশল (ই) ও গণিত (এম) নির্ভর বিশ্বমানের এই শিক্ষাব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে কলা (এ)। যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম এই শিক্ষাব্যবস্থা চালু করে ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন ইউএসএ। এরপরই তা ছড়িয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া, চীন, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান ও যুক্তরাজ্যে।

জানা গেছে, ইংরেজি মাধ্যমের এই স্কুলের সব শিক্ষকই বিদেশি। এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডক্টর লরি সানসেজ। স্কুলে রয়েছে পরিপূর্ণ শিক্ষার সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী পরিবেশ, যা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভবিষ্যতের চাহিদা অনুযায়ী নিজের মেধা ও জ্ঞানকে সমৃদ্ধশালী করে তোলায় সহায়ক হবে।

স্কুলের সুবিধাগুলোর মধ্যে অন্যতম-ছাত্রসহায়ক পরিবেশ, সহায়ক শিক্ষা, পাঠদানে রেজিয়া এমিলা অ্যাপ্রোচ, সোশ্যাল-ইমোশনাল শিক্ষা, প্রজেক্ট বেজড লার্নিং, নেটিভ ইংলিশ স্পিকিং শিক্ষক।

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ও শিশুদের নিরাপত্তা বিবেচনায় স্কুলের প্রবেশমুখেই স্থাপন করা হয়েছে ‘চেহারা শনাক্তকরণ এবং তাপমাত্রা পরিমাক’ যন্ত্র। অননুমোদিত ব্যক্তিদের স্কুলে প্রবেশ প্রতিরোধে স্থাপন করা হয়েছে বিশেষ ক্যামেরা, যা মাস্ক পরিহিত ব্যক্তিকেও শনাক্ত করতে সক্ষম।

স্কুলের অভ্যন্তরে স্থাপন করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বায়ু জীবাণুমুক্তকরণ ব্যবস্থা, যা অনবরত চলমান থাকে। স্কুলের কার্যক্রম শুরুর পূর্বে ও শেষ হওয়ার পরে আল্ট্রা-ভায়োলেট প্রযুক্তিতে ভেতর-বাইরে জীবাণুমুক্তকরণ ব্যবস্থাও রয়েছে। শ্রেণিকক্ষ এবং মিলনায়তনগুলো সুপ্রশস্ত হওয়ায় সত্যিকার সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকা সম্ভব।

আন্তর্জাতিক নির্দেশনা অনুসারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে স্কুলটি অনলাইন এবং অফলাইন উভয় পদ্ধতিতে শিশুদের নিরবচ্ছিন্ন পাঠদান নিশ্চিত করবে। স্কুলটির প্রধান শাখায় ফুটবল ও অন্যান্য খেলাধুলার জন্য বিশাল মাঠ, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, ব্যাডমিন্টন, সুইমিংপুল, অডিটোরিয়ামসহ নানা সুবিধা থাকবে। খেলাধুলা ও শরীরচর্চার পাশপাশি শিশুদের জন্য গান, নৃত্য, চারু ও কারুশিল্প শিখনের সুবিধাও থাকবে।

সফলতার সঙ্গে প্রধান ক্যাম্পাস চালু করার পর একই সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত আরও শাখা খুলবে স্মার্ট ইনোভেশনস স্কুল, যেখানে সমাজের সুবিধা-বঞ্চিতদের জন্য কম খরচে শিক্ষা নেয়ার সুযোগ থাকবে।

স্টিম কারিকুলামের মৌলিক বৈশিষ্ট্য হলো এটি বর্তমান বিশ্বের চলমান সমস্যাগুলোকে গুরুত্ব দেয়, শিশুদের টিম ওয়ার্কে সৃষ্টিশীল কাজে সম্পৃক্ত করে, শিশুর অনুসন্ধিৎসু মানসিকতা তৈরি করে এবং বাধাহীন চিন্তাশক্তির মাধ্যমে নতুন নতুন আবিষ্কারের ভাবনা জাগিয়ে তোলে। শিশু একই সমস্যার বিভিন্ন সমাধান খুঁজে পেতে সমর্থ হয় এবং ব্যর্থতাকেও নিজের জীবনের অংশ বলে ভাবতে শেখে।

প্রতিকূলতাকে মানিয়ে নিয়ে প্রকৃতি থেকে সম্পদ আহরণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে বিজ্ঞানভিত্তিক উপায়ে তা কাজে লাগানোর দক্ষতা তৈরি হয়। এই শিক্ষাব্যবস্থা শিশুদের দৃঢ়চেতা এবং উদ্যোমী করে গড়ে তোলে।


সর্বশেষ সংবাদ