সুখবর পেতে যাচ্ছেন ১৭তম নিবন্ধনে উত্তীর্ণ হয়েও আবেদনবঞ্চিতরা

সচিবালয়ের সামনে ১৭তম নিবন্ধনধারীদের অবস্থান
সচিবালয়ের সামনে ১৭তম নিবন্ধনধারীদের অবস্থান  © টিডিসি ফটো

১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েও বয়স জটিলতায় আবেদন করতে না পারা প্রার্থীদের বিষয়ে ‘ইতিবাচ’ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। দ্রুত সময়ের মধ্যে আবেদনের সুযোগ না পাওয়া প্রার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

বুধবার (২১ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, বুধবার সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের মধ্যস্থতায় শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন আবেদনবঞ্চিত নিবন্ধনধারীরা। এ সময় সেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, অতিরিক্ত সচিব মো: মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষকদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলে বিস্তারিত শুনেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা। এ সময় আদালতের রায়, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত এবং বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) থেকে পাঠানো সুপারিশপত্র দেখেন শিক্ষা উপদেষ্টা। পরবর্তীতে শিক্ষক নিবন্ধন সনদের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে গণবিজ্ঞপ্তিতে অথবা বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে আবেদনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে কথা হয়।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ‘১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণদের দাবিগুলো আমাদের কাছে যৌক্তিক মনে হয়েছে। এ বিষয়ে খুব দ্রুত আমরা একটি সভা করবো। সভায় সনদের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে এবং আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত অনুযায়ী তাদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হতে পারে।’

এর আগে বুধবার বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ের দুই নম্বর গেটের সামনে অবস্থান নেয় ১৭তম নিবন্ধনে উত্তীর্ণ হয়েও আবেদনবঞ্চিতরা। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাদের সড়িয়ে দেয় পুলিশ। এরপর প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন ভুক্তভোগী নিবন্ধনধারীরা। পরবর্তীতে সেখান থেকে নিবন্ধনধারীদের  শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে নিয়ে যায় পুলিশ।

জানা গেছে, ১৭তম নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি প্রকাশ করা হয়। পরবর্তী সময়ে করোনা মহামারি ও এনটিআরসিএর দাপ্তরিক কারণে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ থেকে চূড়ান্ত ফলাফল পর্যন্ত প্রায় চার বছর পর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এমতাবস্থায় ১৭তম নিবন্ধনধারীদের নিয়োগের নিমিত্তে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে তাদের বয়স নির্ধারণের ক্ষেত্রে ওই সময়ক্ষেপণের (যা ৭৩৯ জন আওতার বাইরে ছিল) বিষয়টি বিবেচনায় গ্রহণ করা হয়নি। অথচ সনদের মেয়াদ তিন বছর থাকা সত্ত্বেও একবার আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়নি।

এনটিআরসিএ করোনার প্রকৃত ভুক্তভোগী বিষয়টি বিবেচনা করে ১৭তম আবেদনবঞ্চিতরা গত বছরের ১৪ মার্চ ও ৭ আগস্ট বিশেষ বিজ্ঞপ্তি  প্রকাশের জন্য এনটিআরসিএ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আবার আইনি জটিলতা সাপেক্ষে শিক্ষা উপদেষ্টার সম্মতিক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং এর জন্য পাঠায়। পরবর্তী সময়ে আইন ও বিচার বিভাগের মতামত অনুবিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আবার নীতিগত সিদ্ধান্তের আলোকে গত ২৭ মার্চ এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ থেকে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে রূপরেখা চায়।

আইনি মতামতে উল্লেখ আছে যে, আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী, সনদের মেয়াদ ৩ বছর থাকা সাপেক্ষে এবং করোনা মহামারির মতো পারিপার্শ্বিক  বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ১৭তম নিবন্ধনধারীদের ক্ষেত্রে কোনো তারিখে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ নির্ধারিত হবে, সে বিষয়ে যুক্তিসংগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। এরপরও তাদের আবেদনের হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ