‘ভিপির উপর হামলা মানে গোটা জাতির উপর হামলা’

  © টিডিসি ফটো

ডাকসুর নির্বাচিত ভিপির উপর হামলা মানে গোটা জাতির উপর হামলা, পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর হামলা বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনপি-জামায়াত সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।

আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে বারোটায় সাদা দলের নেতৃত্বে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন থেকে এমন মন্তব্য করেন সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম। ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে এ মানবন্ধনের আয়োজন করা হয়। এ সময় ভিপি ও তার সহযোগীদের ওপর বর্বর হামলার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যকে নষ্ট করেছে এই মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এই হামলার পর আমরা শিক্ষক হিসেবে লজ্জিত। শুধু এই ঘটনা নয়, আজ ঢাবির বিভিন্ন হলেও সন্ত্রাসী হামলা চলে। মতের ভিন্ন হলেই মার দেওয়া হয়। ভিপি তাদের মতের সমর্থন করেনা বলে তাকে মারা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, কয়েকদিন আগে আবরার ফাহাদকে ৫ ঘণ্টা নির্যাতনের মাধ্যমে মেরে ফেলা হয়েছে। এদের বিচার না হলে অন্যায় করার সুযোগ বেড়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে দ্রুত অপরাধীদের বিচারের আওয়াতায় আনার এবং নুরসহ সবার চিকিৎসার খরচ প্রশাসনকে বহন করার দাবি জানান।

রোকেয়া হলের সাবেক প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. লায়লা নূর ইসলাম সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবী জানিয়ে বলেন, ডাকসু সমগ্র জাতির গৌরবের জায়গা। সে জায়গায় সন্ত্রাসী হামলা মেনে নেওয়া যায়না। ঢাবির উপর আঘাত আসলে জাতির উপর আসে। এটা মুক্ত বুদ্ধি চর্চার জায়গা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ মাহমুদ বলেন, আমি প্রতিবাদ জানাচ্ছিনা এই বিচারহীনতার দেশে। আমাদের কণ্ঠস্বর কেড়ে নেওয়া হয়েছে। একটার পর একটা ঘটনা ঘটিয়ে পূর্ব ঘটনা মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন দল। ওয়াদা করতেছি, অদূর ভবিষ্যতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, দল মত না দেখে আমরা প্রতিবাদ করব।

বিজনেস স্টাডিজের একাউন্টটিং এবং ইনফরমেশন বিভাগের অধ্যাপক আলাউদ্দিন সব শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আজকে সাদা দল কেন? সব শিক্ষকের দাড়ানোর কথা ছিল। পর পর নয়বার আক্রমন হওয়ার পরও আমরা শিক্ষকরা নিরাপত্তা দিতে পারিনি। এই হামলাযজ্ঞে প্রশাসনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।

শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিক্ষক অধ্যাপক আলাইদ্দিন হোসেন সম্রাট বলেন, নয়টা ক্যামেরা ছিল ডাকসু ভবনে। একদল নুরদের মারে, আরেকদল নিয়ে যায় সিসিটিভির হার্ডডিস্ক। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ দিনের পর দিন এরকম ঘটনা ঘটিয়েছে। তবুও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ডাকসুতে হামলা হবে, আমরা ঘরে বসে থাকব তা হবেনা।

মানববন্ধন থেকে শিক্ষকরা এ সন্ত্রাসী হামলার জন্য অসন্তোষ প্রকাশ করে। পাশাপাশি এই হামলার সাথে জড়িত সকল অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। এরকম ঘটনার পুনরাবৃতি না ঘটার জন্য প্রতিরোধ এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানান শিক্ষকরা।

সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে অর্ধশতাধিক শিক্ষক এতে অংশ নেন। মানবন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাক ড. মো. লুঃফর রহমান, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. হাসানুজ্জামান, তরুণ উদ্ভিদবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী, অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রশীদ, অধ্যাপক মো. শহীদুল ইসলাম, একাউন্টিং এন্প ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষাক মো. আল আমিন প্রমুখ।


সর্বশেষ সংবাদ