রোকেয়া হল

হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ছাত্রলীগ ও কোটা আন্দোলনকারীদের

আর মাত্র ১০দিন। এরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’র (ডাকসু) নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় ক্যাম্পাস যেমন সরগরম হয়ে উঠেছে, তেমনি হলগুলোও হয়ে উঠেছে ছাত্র রাজনীতিময়। আর এ দৌঁড়ে পিছিয়ে নেই বেগম রোকেয়া হল।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে হলটিতে ভিপি, জিএস ও এজিএস পদে মোট ৯জন লড়ছেন। এর মধ্যে ভিপি পদে ৩ জন, জিএস পদে ৩ জন এবং এজিএস পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সূত্রের তথ্য, হলটিতে ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে ভিপি পদে লড়ছেন ইসরাত জাহান তন্বী। চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলার বিভাগের ২০১৫-২০১৬ সেশনের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। বর্তমানে হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তন্বী।

আরও পড়ুন: নির্বাচিত হলেও হলে আসতে দেব না: ছাত্রলীগ নেতার হুমকি

অন্যদিকে কোটা সংস্কারকারীদের প্লাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদ’ থেকে ভিপি পদে দাঁড়িয়েছেন মোছা. রাফিয়া সুলতানা। কলা অনুষদের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১২-২০১৩ সেশনের মাস্টার্সের ছাত্রী তিনি। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে পদটিতে লড়ছেন মৌসুমী। সমাজবিজ্ঞান অনুষদের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ২০১১-২০১২ সেশনের শিক্ষার্থী মৌসুমী।

হল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হলটিতে মূলত ছাত্রলীগের তন্বী ও কোটা আন্দোলনকারীদের প্রার্থী রাফিয়া সুলতানার মধ্যে মূল লড়াই হবে। সে ক্ষেত্রে যে কেউ সুবিধাজনক স্থানে চলে আসতে পারেন। জানতে চাইলে রাফিয়া সুলতানা বলেন, জয় তো অবশ্যই চাই। ভিপি হলে কী করবেন প্রশ্নে তিনি জানান, নির্বাচিত হলে খাবারের মান উন্নয়ন থেকে রিডিং রুমের অবৈধ দখলদারিত্ব রোধ, বৈধ ছাত্রীদের জন্য সিট বরাদ্দ, হলে ফার্মেসির ব্যবস্থা, হলের জন্য নিজস্ব এম্বুলেন্স বরাদ্দ ও ওয়াশরুমগুলোর উন্নয়ন সাধনের জন্য কাজ করব। পাশাপাশি মেয়েদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্যও কাজ করতে চান রাফিয়া।

ছাত্রলীগের প্রার্থী ইসরাত জাহান তন্বী বলেন, সবার মতামত নিয়ে শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধান করতে চেষ্টা করব। তার ভাষ্য, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমার চাওয়া হলো- হলের রিডিংরুম উন্নয়ন, ক্যান্টিনে খাবারের মান বৃদ্ধি ও হলের ভেতরে একটি ফার্মেসী দেয়া। সেই সঙ্গে কনফেকশনারী দোকানের উন্নয়নসহ সকল সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করার কথা জানান তিনি।

স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী মৌসুমী বলেন, নির্বাচনের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি জানান, আমার প্রথম চাওয়া- বেগম রোকেয়ার  আদর্শে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা। পাশাপাশি হলে সকল সাধারণ শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করব। হলের দখলদারিত্ব দূর করব। সমতা নিশ্চত করব। মৌসুমীর ভাষ্য,গত ৫ বছর হলে থেকে আমি যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হয়েছিল, মূলত সেগুলোই সমাধান করার চেষ্টা করব। 

জিএস পদেও তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এই হলে। এর মধ্যে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে রয়েছেন সামমা আক্তার। তিনি কলা অনুষদের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-২০১৬ সেশনের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। একইসঙ্গে হল শাখা ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক। প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও সাম্রাজ্যবাদী ছাত্র ঐক্যের প্যানেল থেকে জিএস পদে লড়ছেন মুনিরা দিলশাদ ইলা। কলা অনুষদের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৪-২০১৫ সেশনের মাস্টার্সের ছাত্রী তিনি। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে জিএস পদে লড়ছেন মনিরা চৌধুরী লিমা। তিনি অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-২০১৭ সেশনের শিক্ষার্থী।

পড়ুন: ব্রিটানিকা বিশ্বকোষে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে ভুল তথ্য

এর বাইরেও এজিএস পদে লড়ছেন ফাল্গুনী দাস তন্বী (ছাত্রলীগের প্যানেল)। তিনি চারুকলা অনুষদের কারুশিল্পের ২০১৫-২০১৬ সেশনের ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী ওহল ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও সাম্রাজ্যবাদী ছাত্র ঐক্যের প্যানেল থেকে এজিএস পদে লড়ছেন অর্থি সাহা। তিনি চিনা ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৭-২০১৮ সেশনের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে নির্বাচন করছেন শেখ সায়িদা আফরিন শাফী। তিনি সমাজবিজ্ঞান অনুষদের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের ২০১৪-২০১৫ সেশনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।


সর্বশেষ সংবাদ