অসুস্থ নুসরাতের মা, দেখে যেতে চান মেয়ের খুনিদের ফাঁসি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২১, ০৯:৩৩ AM , আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২১, ০৯:৩৩ AM
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দুবছর হয়েছে আজ শনিবার (১০ এপ্রিল)। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের দুবছর হলেও পরিবারে কাটেনি শোকের আবহ। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি মা শিরিনা আক্তার। শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা অসুখ। রয়েছে কিডনি ও হার্টের সমস্যা।
নুসরাত হত্যাকাণ্ডের দুবছরে অশ্রুসজল চোখে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বলেন, ‘দুই বছর হয়ে গেল, কলিজার ধন একমাত্র মেয়ে হত্যার শিকার হয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছি, ভয় হয় কখন মরে যাই। সরকারের কাছে আমার দাবি- দ্রুত খুনিদের ফাঁসি কার্যকর করুন। মৃত্যুর আগে যেন তাদের বিচার কার্যকর দেখে যেতে পারি।’
এসময় তিনি মামলার অগ্রগতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাংবাদিকদের সহযোগিতায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শেষ পর্যন্ত পাশে থাকার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
নুসরাত হত্যা মামলা নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শাহ জাহান বলেন, ‘আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর মামলার যাবতীয় কার্যক্রম হাইকোর্টে পৌঁছে। আপিলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করেন প্রধান বিচারপতি। তবে করোনার কারণে শুনানি দেরি হওয়ায় বেঞ্চ বাতিল হয়ে গেছে।’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের বেঞ্চ গঠন করে মামলার শুনানি শুরু হবে বলে আশা করেন তিনি।
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহানকে ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে নিয়ে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে ৯ এপ্রিল রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়। ওই বছরের ২৪ অক্টোবর জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ মামলায় ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
২০১৯ সালে ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে মামলা করলে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে মামলা তুলে না নেওয়ায় ওই বছরের ৬ এপ্রিল নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় বোরকা পরা পাঁচজন। ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান আটজনের নামসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।