পালিয়ে বিয়ে, ১৩ বছরের মেয়েকে শিকলে বেঁধে রাখার ভিডিও ভাইরাল

শোভা আক্তার
শোভা আক্তার  © সংগৃহীত

ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক প্রতিবেশীর সঙ্গে এক স্কুলছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার একপর্যায়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে তারা। পরে ছেলের পরিবার মেনে নিলেও মেয়ের পরিবার নারাজ। এজন্য মেয়ের বাবা ঘরের একটি কক্ষে তাকে খাঁটের সঙ্গে বেঁধে রাখেন শিকল দিয়ে। ফেসবুকে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। গত মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) শেখ নজরুল ইসলাম নামে ফেসবুক আইডিতে ভিডিওটি দেখা যায়।

জানা গেছে, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার লক্ষ্মী নারায়ণপুর গ্রামের জান শরীফ মোল্লার মেয়ে শোভা আক্তার (১৩)। সে লক্ষ্মী নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। ২০১৯ সালে প্রতিবেশী হাসান মালতের ছেলে আহাম্মদ আলী মালতের (২১) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। গত ২৯ অক্টোবর তারা পালিয়ে বিয়ে করে।

বিয়ের পর তারা পূর্বডামুড্যা এলাকায় লুকিয়ে থাকে। দুইদিন পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করে পরিবার। এসময় আহাম্মদ আলীর পরিবার তাকে বউ হিসেবে ঘরে তুলতে চাইলেও শোভার পরিবার নারাজ। এজন্য তার বাবা সখিপুর থানায় মামলা করেন। মামলার পর তাকে গ্রেফতার করে শরীয়তপুর আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ খবর শুনে পাগলামি শুরু করে শোভা। পরে বিচারক তাকে সেফ কাস্টডিতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত ২৪ নভেম্বর শোভা বাবা-মার কাছে জামিনে আসে। তবে এখন অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তার বাবা ঘরের খাঁটের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। শোভার বাবা জান শরীফ মোল্লা বলেন, ‘মেয়েকে সবসময় শিকল দিয়ে বাঁধি না। দেখে রাখি, নাহলে আহাম্মদ আলীর বাড়িতে চলে যায়, পাগলামি করে। একদিন শিকল দিয়ে বাঁধি, কারা তা ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে দিয়েছে।’ আহাম্মদ আলী মাদক বিক্রি করায় তার কাছে মেয়ে দিতে চাচ্ছেন না বলেও জানান তিনি।

আহাম্মদ আলীর মা সুরত নেছা বলেন, ‘দুজন সম্পর্ক করে বিয়ে করেছে, আমরা জানতাম না। উদ্ধার হওয়ার পরে জেনেছি। ছেলে ভুল করে ফেলেছে, শোভাকে বউ হিসেবে ঘরে তুলতে চাই। কিন্তু তার পরিবার রাজি নয়। এজন্য আমার ছেলে জেল খাটছে।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য আকতার সরদার বলেন, ‘আহাম্মদ আলী ও শোভা পালিয়ে গেলে আমরা তাদের উদ্ধার করি। ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে সংসার করতে চাইলেও মেয়ের পরিবার রাজি নয়। মেয়ের বয়স অল্প হওয়ায় আমরা কিছু করতে পারছি না।’

সখিপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হালিম জানান, শোভার বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর আল নাসীফ বলেন, শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ