সেহরিতে মাইকে ডাকাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩১

আহত মাদ্রাসা শিক্ষার্থী
আহত মাদ্রাসা শিক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

পঞ্চগড় সদর উপজেলায় সেহরিতে মাইকে ডাকাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সহ আহত হয় ৩১ জন। শনিবার (২২ মার্চ) বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলায় হাফিজাবাদ এলাকার তেলিপাড়া নেছারিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে। 

এ ঘটনায় মাদরাসার শিক্ষক, ছাত্র ও কমিটির সভাপতিসহ আহত হয়েছেন ২৯ জন। অপরপক্ষের আহত হয়েছেন ২ জন। দুইপক্ষের মোট ৩১ জন পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ওই মাদরাসার মসজিদের মাইকে  প্রতিদিন সেহরিতে খেয়ে রোজা রাখার জন্য ডেকে দেয়া হতো। সেহরিতে ডাকাডাকি নিয়ে প্রতিবেশী কায়েদে আজমের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন প্রতিবাদ করেন। পরে কয়েকদিন মাইক বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু ওই সমাজের বেশিরভাগ মানুষ মাইকে ডাকার দাবি জানালে আবারো মাইকে ডাকাডাকি শুরু হয়। শনিবার বিকেলে বাজার করে ফেরার পথে মাদ্রাসা শিক্ষক আরিফ হাসান ও মুহতাসিম বিল্লাহকে আটক করে কায়েদে আজম ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। এ সময় বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সাবিনা ইয়াসমিন জুতা দিয়ে এবং কায়েদে আজম লাঠি দিয়ে তাদের মারধর শুরু করে।

খবর পেয়ে মাদরাসার অন্য শিক্ষক ও ছাত্ররা ছুটে আসলে ওই দম্পতি ও তাদের স্বজনরা তাদেরও মারধর করে। এ সময় মাদরাসার পরিচালকের মা গুলজান নেহার (৫০) ও ৩ জন শিক্ষক ও  ২৪ জন ছাত্রসহ আহন হন ২৯ জন। অপরপক্ষের কায়েদে আজম ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও আহত হন। তাদের পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  

মাদ্রাসা ছাত্র রেজওয়ান সরকার বলেন, ‘আমাদের দুইজন শিক্ষককে মারধরের খবর পেয়ে আমরা এগিয়ে গেলে আমাদেরও নির্বিচারে মারধর করা হয়। আমাদের ঘরে ভাঙচুর করা হয়।’

মাদরাসার শিক্ষক মুহতাসিম বিল্লাহ বলেন, ‘মাইকে সেহরিতে ডাকার বিষয়ে তারা আপত্তি জানালে আমরা কিছুদিন মাইক বন্ধ রাখি। পরে বেশিরভাগ মানুষ ডাকার বিষয়ে দাবি জানালে পরে আবার ডাকা শুরু হয়। তবে মাইক অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়া হয়। এতে তারা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। বিকেলে আমরা ফেরার পথে আমাদের আটক করে মারধর শুরু করে তারা। কায়েদে আজমের স্ত্রী জুতা দিয়ে এবং সে লাঠি দিয়ে মারধর করতে শুরু করে।’

অভিযোগ অস্বীকার করে কায়েদে আজমের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘তারা উচ্চস্বরে মাইকে দীর্ঘ সময় ডাকাডাকি করে। মাইক তারা আমার বাড়ির দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। আমার বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমার খুবই সমস্যা হচ্ছে। আমি তাদের একটি উঁচুতে মাইক বাঁধতে বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়ার অনুরোধ করেছিলাম। তারা তা শোনেনি।’

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, ‘সেহরিতে ডাকাডাকি ও পূর্ব শত্রুতার জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা জেনেছি। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ মামলা করেছেন। এ ঘটনায় তদন্তের পাশাপাশি আসামি গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’


সর্বশেষ সংবাদ