বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হত্যায় সাবেক এমপি টগরসহ ১৫ জনের নামে মামলা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৮ PM , আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৮ PM
পাঁচ বছর আগে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র মো. রোকনুজ্জামানকে কৌশলে অপহরণ ও ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নাটক সাজিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দামুড়হুদা আমলি আদালতে মামলাটি করেন নিহত ছাত্রের বাবা মো. আবু বক্কর ছিদ্দিক।
মামলায় চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর, তৎকালীন দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাসসহ ১৫ জনকে এর আসামি করা হয়েছে।
মামলার উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন—দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম জাহাঙ্গীর, সহকারী পরিদর্শক (এসআই) তপন কুমার নন্দী ও শেখ রফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল দিপু গাঙ্গুলী, খালিদ মাসুদ, নজরুল ইসলাম, শফিউর রহমান ও ফিরোজ ইকবাল এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুরের মাছুম, সুমন, রাজিব ও সজল।
আরও পড়ুন: ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত ভর্তি কাল থেকে, ক্লাস শুরু ২০ অক্টোবর
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে—মো. রোকনুজ্জামান ২০১৯ সালে চুয়াডাঙ্গা ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বেআইনি, অনৈতিক কার্যকলাপ ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় এবং ভিন্নমতের অনুসারী হওয়ায় আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে রোকনুজ্জামানকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। আসামি আলী আজগার ভোট চুরির মাধ্যমে নির্বাচিত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
‘আলী আজগারের নির্দেশে ২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট দুপুরে আসামি সজল বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্র রোকনুজ্জামানকে কৌশলে মুঠোফোনে ডেকে দক্ষিণ চাঁদপুর ছটাঙ্গার মাঠে যেতে বলেন। বাবা আবু বকর ছিদ্দিককে জানিয়ে রোকনুজ্জামান আসামি সজলের সঙ্গে ছটাঙ্গার মাঠে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর আসামিরা অস্ত্রের মুখে রোকনুজ্জামানকে অপহরণ করেন। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে খোঁজখবর করেও কোথাও পাওয়া যায়নি।’
পরদিন সকালে লোকমুখে জানতে পারেন দামুড়হুদার জয়রামপুর কাঁঠালতলার বখতিয়ার মিয়ার বাঁশবাগানে রাত ২টার দিকে একজনকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। সদর হাসপাতালের মর্গে গিয়ে বাদী ছেলে রোকনুজ্জামানের মরদেহ শনাক্ত করেন। ময়নাতদন্ত শেষে ওইদিন রাতে তার দাফন করা হয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে একই মামলার আরজিতে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে আশ্বাস দিয়েও পদত্যাগ করেননি ডিন, আল্টিমেটাম শিক্ষার্থীদের
এছাড়াও পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রোকনুজ্জামানকে হত্যার উদ্দেশ্যে এজাহারভুক্ত ১১ থেকে ১৫ নম্বর আসামি কৌশলে অপহরণ করেন। এরপর প্রধান আসামি আলী আজগারের নির্দেশে ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা রোকনুজ্জামানকে গুলি করে হত্যা করেন। সন্তানের দাফন শেষে বাদী মো. আবু বকর ছিদ্দিক ওই বছরের ৩১ আগস্ট দামুড়হুদা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও পুলিশ তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি। বাদী দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকায় বাড়িতে ফিরে মামলা করতে দেরি হয় বলে আরজিতে উল্লেখ করেছেন—উল্লেখ করা হয়েছে একই মামলার আরজিতে।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মামুন আখতার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হত্যার পাঁচ বছর পর নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক এমপি, দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের সাবেক ওসি, পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছেন।
আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা কামাল মামলাটি আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ঝিনাইদহ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।