জবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য, হত্যা বলছে পরিবার

  © টিডিসি ফটো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার দুইদিন পর রাজুর বাবার দাবি, তার ছেলের মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চান। 

এর আগে গত শনিবার (২৯ এপ্রিল) গ্রামের বাড়ী পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় ফিরে হটাৎ খিচুনি দিয়ে অচেতন হয়ে পড়লে রাজুর সহপাঠীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

রাজুর বাবা বলেন, ঘটনার আগেরদিন শুক্রবার সকাল ১০টার সময় রাজু ও রাজুর আম্মু এবং বোন একসাথে খাবার গ্রহণ করেন। খাবার খাওয়ার পর রাজুর আম্মু ও বোনের বমি হয়। আমি সকালের নাস্তা ও টিউবওয়েলের পানি খেয়ে মাঠে বীজ বুনতে যাই। এরপর বাসায় ফিরে মসজিদে নামাজপড়া অবস্থায় আমার শরীরের মধ্যে অস্থির অস্থির লাগতে শুরু করে। পরে বাসায় ফিরে দেখি রাজু ওর আম্মু ও আমার ছোট মেয়ে ঘুমাচ্ছে। আমি কৃষি কাজের মানুষ। আমার নিজের খারাপ লাগলেও আমি মাঠে চলে যাই। এরপর সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে এসে দেখি, ওরা সবাই তখনও ঘুমাচ্ছে।  

তিনি আরও বলেন, আমার বড় বোন (রাজুর ফুফু) ওদেরকে ডাকাডাকি করলেও কোন সাড়াশব্দ দিচ্ছে না। এরপর রাজুকে ডেকে বলে, তোর নাকি আজকে রাতের ট্রেন ৯.৩০ এ। তুই এখনও ঘুমাচ্ছিস? যা উঠে স্টেশনে চলে যা, ৮টা বেজে গেছে। ততক্ষণে আমিও ঘুমায় গিয়েছি।  রাজু’র ফুপু, ওকে তুলে দিয়ে, জামা কাপড় গুছিয়ে দিয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় রান্না করা খাবার টিফিন বক্সে দিয়ে, রাজুকে ভ্যান গাড়িতে তুলে দেয়। 

পরবর্তীতে বাসার পাশের এক ভ্যান গাড়ি চালক রাজুকে স্টেশনে পৌঁছে দেয়। সেখানে রাজুর ক্লাসমেট একই বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়ার সাথে তার দেখা হয়। রাজুর বাবার ভাষ্যমতে, ভ্যানচালক সাদিয়াকে রাজুকে একটু দেখে রাখতে এবং তার বাসায় সবাই যে অসুস্থ সে বিষয়টিও জানান। 

পরবর্তীতে ঢাকার ট্রেনে উঠার আগেই রাজু তার এই সহপাঠীকে তার অসুস্থতার কারণ সন্দেহজনক বলে জানান। তিনি বলেন, তাদের টিউবওয়েলে হয়ত কেউ কিছু দিয়েছে এবং বাসার সবাই এই পানি খেয়ে ঘুমাচ্ছে। 

রাজুর রুমমেট শরীয়তুল্লাহ জানান, রাজু খাওয়া দাওয়ার পর তিনি গায়ে হাত দিয়ে দেখেন রাজুর শরীর অনেক গরম। তখন কারণ জানতে চাইলে রাজু তাকে তাদের বাসায় এক আশ্চর্য্যজনক ঘটনা ঘটছে এবং সবাই বলে জানান। 

শরীয়তুল্লাহর ভাষ্যমতে, পরবর্তীতে রাজু খেলা দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পরে। তারপর হটাৎ খিচুনি উঠার মত হয় এবং তিনি গিয়ে রাজুকে নাড়াচাড়া করে কোনো সাড়া না পেয়ে তার রুমমেট আরেক রুমমেট আরাফাত কে জানান। তারপর তারা রাজুর অন্য বন্ধুদের জানিয়ে তাকে নিয়ে যান। 

রাজুর সহপাঠী ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত বলেন, আমরা দেরি না করে এম্বুলেন্সে করে রাজুকে ঢাকা মেডিকেল নিলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে পোস্ট মর্টেমের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। তবে রিপোর্টটি এখনও পাওয়া যায় নি। 

জানা যায়, এই ঘটনার পর আর্থিক সমস্যার কথা চিন্তা করে রাজুর বাবা আর মামলা করতে চান নি। তবে গ্রামের সবাই বুঝানোর পর তিনি এখন মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে এবং এই কাজে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence