ঘুষের টাকা নিয়ে এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের পাল্টাপাল্টি হামলা

রেজাউল করিম বাবলু এবং সোহরাব হোসেন ছান্নু
রেজাউল করিম বাবলু এবং সোহরাব হোসেন ছান্নু  © সংগৃহীত

ঘুষের টাকা পাওয়াকে কেন্দ্র করে বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু এবং শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নুর বিরুদ্ধে একে অন্যের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলায় আহত হন সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) রেজাউল করিম। তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজ বুধবার সকাল ১০টায় সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু তার পিএস ও লোকজন নিয়ে আসেন শাজাহানপুর উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় যোগ দিতে। তিনি আসেন উপজেলা পরিষদে। এ সময় এমপির কাছে ঘুষের টাকা ফেরত চান উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীর। অতঃপর দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন এমপির পিএস রেজাউল করিম (৩৫) ।

আরও পড়ুন: চলতি মাসেই গুচ্ছের ভর্তি বিজ্ঞপ্তির সিদ্ধান্ত

এরপর হৈচৈ শুনে উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরার হোসেন ছান্নু চলমান আইন-শৃঙ্খলা সভা থেকে  দ্রুত বের হয়ে এসে পরিবেশ শান্ত করার চেষ্টা করেন। এ সময় এমপি বাবলু তার ব্যক্তিগত পিস্তল বের করে চেয়ারম্যানের দিকে তাক করে হত্যার হুমকি দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও পরিষদের লোকজন এগিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। অতঃপর পিস্তল বের করে হত্যার হুমকি দেয়ার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক ভাবে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। 

শাজাহানপুর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীর বলেন, তিনি এমপিকে ৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করেন সরকারি কাজ পাওয়ার জন্য । এর মধ্যে বরাদ্দ বাবদ ও নগদে মোট ৩ লাখ টাকা পেয়েছেন তিনি। এখনও ৯৫ হাজার টাকা পাননি। টাকা ফেরত চাইলে এমপি বাবলু তালবাহানা শুরু করে। উপজেলা পরিষদে আসলে তার কাছে টাকা ফেরত চাওয়া হয়। এতে উত্তেজিত হয়ে তিনি এবং তার সঙ্গের লোকজন তার ওপর হামলা চালায়। এমনকি উপজেলা চেয়ারম্যান এগিয়ে এলে তার দিকে পিস্তল বের করে হত্যার উদ্দেশ্যে তাক করেন।

শাজাহানপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নু বলেন, হৈচৈ শুনে বিষয়টি জানার ও পরিবেশ শান্ত করার চেষ্টা করা হয়। এ সময় সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু উত্তেজিত হয়ে তার দিকে হত্যার উদ্দেশ্যে পিস্তল তাক করেন। তখন ভয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে আইন-শৃঙ্খলা সভাকক্ষে প্রবেশ করি।

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু বলেন, বুধবার উপজেলা পরিষদে যাই। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন ছান্নু ও উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাদশা আলমগীরের নেতৃত্বে যুবলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা করে। পরে তিনি আত্মরক্ষার্থে তার লাইসেন্স করা ব্যক্তিগত পিস্তল বের করেন।

তিনি আরও বলেন, কে কাকে টাকা দিয়েছে, আর নিয়েছে তা তিনি জানেন না। তার কেউ টাকা নিয়ে থাকলে তার কাছে অভিযোগ দেয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু তা না করে এভাবে হামলা করাটা অন্যায় হয়েছে। 

বগুড়ার শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ পাঠিয়ে পরিবেশ শান্ত করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ