ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ
প্রাথমিক শিক্ষকদের কমপ্লিট শাটডাউনে ভোগান্তিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা
- ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০৫ PM
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে বার্ষিক পরীক্ষা কার্যক্রম। উপজেলার মোট ১৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১৭টিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাকি ১৩৩টি বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মবিরতির কারণে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়নি। এতে পরীক্ষা দিতে এসে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
সকাল থেকে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিশুরা পরীক্ষা দেওয়ার আশায় স্কুলে এলেও শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে থাকায় পরীক্ষা হয়নি। কেউ কেউ মাঠে খেলাধুলায় মেতে ওঠে, আবার অনেকেই অভিভাবকের সঙ্গে বাড়ি ফিরে যায়। হেলাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতির কারণে পরীক্ষা না হওয়ায় খেলাধুলায় ব্যস্ত শিশুদের এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
পরীক্ষা বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা শাটডাউনকে ‘অমানবিক’ আখ্যা দিয়েছেন। অভিভাবক বজলুর রহমান বলেন, ‘বার্ষিক পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে শিক্ষকরা এমন কর্মসূচি না দিলে পারতেন। পরীক্ষার পরে আন্দোলন করলে সমস্যা হতো না। সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’
জানা গেছে, গত ৮ নভেম্বর রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকরা তিন দফা দাবিতে সমাবেশ করেন। এর মধ্যে প্রধান দাবি ছিল সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণ। সমাবেশে ঘোষণা দেওয়া হয়, ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন না হওয়ায় এখন কমপ্লিট শাটডাউনে নেমেছেন শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলার এসবিজিএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশফাকুল কবীর বলেন, ‘আমাদের ন্যায্য দাবি দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত থাকায় বাধ্য হয়েই আমরা এই কর্মসূচিতে নেমেছি।’
কালীগঞ্জ উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিহার সুলতানা জানান, ১১তম গ্রেডের দাবিতে গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে বড় সমাবেশ হয়েছে। প্রতিশ্রুতি পেলেও এখনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, ‘২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় বাধ্য হয়ে আমরা কমপ্লিট শাটডাউন পালন করছি।’
এদিকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ঝিনাইদহ জেলায় মোট ৯০৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৪৬টিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ৪৬২টিতে হয়নি। কালীগঞ্জ উপজেলায় ১৫০টির মধ্যে মাত্র ১৭টিতে পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আমজাদ হোসেন বলেন, আজ বুধবার উপজেলায় ১৫০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১৭টিতে বার্ষিক পরীক্ষা হয়েছে। বাকি ১৩৩টি বিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মবিরতির কারণে পরীক্ষা নেওয়া যায়নি।