গরুচোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
- গাইবান্ধা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:০৫ PM
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে গরুচোর সন্দেহে পিটিয়ে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বজনদের দাবি, সালামকে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুলালী বেগম (৪৩) নামের এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের তিস্তার চরাঞ্চলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম আব্দুস সালাম (৫০)। তিনি বেলকা ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের মৃত ওমেদ আলীর ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে ঢোকেন সালাম। গণির স্ত্রী দুলালী বিষয়টি টের পেয়ে স্বামীকে ডাকেন। গণির পরিবারের সদস্যরা গিয়ে সালামকে ধরে ফেলে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলেন। এরপর তাকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে সালাম জ্ঞান হারালে তাকে পুকুরের পাশে ফেলে রাখা হয়। ভোরে আবারও তাকে টেনে নিয়ে গিয়ে মারধর করার এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান সালাম।
খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত নারী দুলালী বেগমকে আটক করেছে।
আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘কয়েক দিন আগে আমাদের শ্যালো মেশিন হারায়। রাতে গোয়ালঘরে শব্দ শুনে স্বামীকে ডাকি। গিয়ে দেখি লোকটা গরুর বাঁধন খুলতেছে। আমি শুধু আশপাশের লোকজনকে খবর দিছি, পরে তারা মারছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুলালী বেগম নিজেই লোকজন জড়ো করে সালামকে বেঁধে পেটাতে উৎসাহ দেন।
তিনি নাকি নিজের হাতে স্বামীকে ধারালো অস্ত্রও তুলে দেন। স্থানীয়রা জানান, নিহত সালাম ছিলেন দীর্ঘদিনের মানসিক রোগী—চুরি বা অপরাধের কোনো ইতিহাস তার ছিল না। তিনি মানুষের বাড়িতে কাজ করে বা ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
স্বজনদের দাবি, সালামকে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন গাইবান্ধা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিদ্রোহ কুমার কুন্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাকিম আজাদ এবং বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।