গাইবান্ধায় ডোপ টেস্ট সংকট: সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তি
- গাইবান্ধা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৩৩ PM
গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে টানা সাত মাস ধরে সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে ডোপ টেস্ট সেবা। কিট সংকটকে দায়ী করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদিও বলছে দরপত্র জটিলতার কথা, কিন্তু এতে জেলার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে পরিবহন শ্রমিক, চাকরি প্রত্যাশী ও ড্রাইভিং লাইসেন্সধারীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ মেডিকেল সনদের জন্য হাসপাতালে এসে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কিট সরবরাহ বন্ধ থাকা এবং নতুন করে কিট ক্রয় প্রক্রিয়ায় দরপত্র-সংক্রান্ত জটিলতাকেই এই দীর্ঘসূত্রতার জন্য দায়ী করা হচ্ছে। তবে এই দীর্ঘ সময়েও একটি অত্যাবশ্যকীয় মেডিকেল সেবা চালু করতে না পারাকে স্থানীয়রা দেখছেন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা হিসেবে।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আসিফ এ পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ডোপ টেস্ট কিট সরবরাহ বন্ধ থাকায় আমরা সেবা দিতে পারছি না। সেই সঙ্গে নতুন করে কিট কেনার জন্য দরপত্র প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’
এই সংকটের মুখে পড়ে অনেককেই বাধ্য হয়ে পরীক্ষার জন্য পাড়ি জমাতে হচ্ছে রংপুর বা বগুড়ায়। ফলে স্বল্প আয়ের মানুষদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত সময় ও অর্থের বোঝা। শুধু যাতায়াত খরচই বেড়ে গেছে দ্বিগুণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই ইস্যুতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ পাচ্ছে। অনেক ব্যবহারকারী তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ডোপ টেস্ট বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পরিবহন খাতের সঙ্গে জড়িতরা। নতুন লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গাইবান্ধা জেলা বাস-মিনিবাস ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মোত্তালেব সরকার বকুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রশাসন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় আমরা দীর্ঘদিন থেকে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। ডোপ টেস্ট বন্ধ থাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পরিবহন শ্রমিকরা। তাদের হয়রানি বাড়ছে।’
বিআরটিএ গাইবান্ধা সার্কেলের মোটরযান পরিদর্শক মো. কামাল আহমেদ কাজল বলেন, ‘জেলায় ডোপ টেস্ট বন্ধ থাকায় আমরা চরম সমস্যায় পড়েছি। সব কাজ সঠিক সময়ে শেষ করলেও ডোপ টেস্ট সনদ পেতে দেরি হচ্ছে। ফলে নতুন লাইসেন্স ইস্যু কিংবা নবায়নে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আমরা নিয়মিতভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি সমস্যার সমাধানের জন্য।’