দেশে ৯ বছরে স্নাতক পাস বেকার বেড়েছে তিন গুণ

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন  © প্রতীকী ছবি

দেশে গত ৯ বছরে স্নাতক পাস বেকারের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে দেশে মোট বেকারের ৯.৭ শতাংশ ছিল উচ্চশিক্ষিত। ২০২২ সালে এসে তা ২৭.৮ শতাংশে পৌঁছায়। শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ চাকরি পেতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চাকরি হারানো ও প্রকৃত মজুরি কমে যাওয়ায় এ বছর দেশের প্রায় ১২ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মুখোমুখি হতে পারে।

‌‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশে মোট জনশক্তির মধ্যে ৫ ভাগের সামান্য বেশি সরকারি চাকরির সুযোগ পায়। অথচ বেসরকারি খাতে যথেষ্ট কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যেখানে অনেক দেশ উদ্যোক্তা ও স্টার্টআপ তৈরিতে নীতিগত সহায়তা দিচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের তরুণরা সুযোগ ও দিকনির্দেশনার অভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। জামানতের অভাবে অর্থায়নের পর্যাপ্ত সুযোগ না পাওয়া এবং ব্যাংকগুলো জেন্ডার বৈষম্য করায় নারী উদ্যোক্তারাও অগ্রসর হতে পারছে না।

অন্যদিকে, বেশ কিছু গবেষণার বরাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে স্নাতকদের দক্ষতা ও চাকরির বাজারে চাহিদা অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় বেকারত্ব বাড়ে। তুলনামূলক কম বয়সী, এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে নারীদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

২০১৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দেশের সামগ্রিক বেকারত্বের হার কমা সত্ত্বেও, প্রায় এক-পঞ্চমাংশ তরুণ বয়সী নারী বেকার রয়ে গেছেন। এতে বোঝা যায়, উচ্চশিক্ষা শেষ করার পর উপযুক্ত চাকরি পেতে নারীদের তুলনামূলক বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এখনো নারীদের বেতন বৈষম্য ও নিয়োগের সময় বৈষম্যের শিকার হতে হয় বলে প্রতিবেদনে বলেছে বিশ্বব্যাংক।

গতকাল মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের কার্যালয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের সময়, বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, তরুণরা, বিশেষ করে যারা শহরাঞ্চলে থাকেন তাদের চাকরি পেতে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়।

তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের বেশিরভাগ সুযোগ তৈরি হয়েছে কৃষিখাতে। এই খাতে বড় একটি অংশের নিয়োগ হয় অনানুষ্ঠানিকভাবে এবং বেতনও কম। শিল্প ও সেবা খাতে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়নি। বাংলাদেশের বেশিরভাগ কৃষি খামার আকারে ছোট এবং প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে, বাংলাদেশে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৯.১ শতাংশ হলেও এই খাতে কর্মসংস্থান ৯.৬ শতাংশ কমেছে।


সর্বশেষ সংবাদ