ভারতে চাকরির বাজারে কঠিন সঙ্কট, সমস্যা বেতনেও

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চাকরির হিসেব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকার তথা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি রীতিমতো প্রশ্নের মুখে পড়ল। কিছুদিন আগেও প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, তাঁর আমলে যথেষ্ট চাকরি হলেও তার সঠিক হিসেবটা কষা নেই। কিন্তু অর্থনীতিবিদেরা সরকারি তথ্য থেকেই হিসেব কষে দেখিয়ে দিলেন, আর্থিক বৃদ্ধির হারে তাঁর জমানায় ভারত বিশ্বসেরা বলে মোদী সরকার যতই ঢাক পেটাক, আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন চাকরি কিন্তু হচ্ছে না। উল্টে ২০১৩ থেকে ২০১৫-র মধ্যে মোট চাকরির সংখ্যা ৭০ লক্ষ কমেছে। এবং ক্রমশ কমেই যাচ্ছে।- খবর আনন্দবাজার পত্রিকার

মোদী ক্ষমতায় আসার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বছরে ১ কোটি নতুন চাকরি দেবে তাঁর সরকার। কিন্তু শ্রম মন্ত্রকের পরিসংখ্যানেই অনেক কম চাকরির হিসেব দেওয়ায়, ২০১৫-র পর থেকে সেই সমীক্ষা প্রকাশই বন্ধ করে দিয়েছে মোদী সরকার! সমালোচনার মুখে প্রধানমন্ত্রী নানা উদাহরণ দিয়ে সংসদে এক কোটি নতুন চাকরির হিসেব দেখিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা সুরজিৎ ভাল্লা আবার এক কদম এগিয়ে দাবি করেছেন, ২০১৭-য় ১ কোটি ৩০ লক্ষ নতুন চাকরি হয়েছে।

anadabazar

র আজই আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর সাস্টেনেবল এমপ্লয়মেন্ট’-এর দেশের চাকরির অবস্থা নিয়ে রিপোর্ট জানাল, ১০ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধি হলে নতুন চাকরির সংখ্যা ১ শতাংশ বাড়ছে। এখন আর্থিক বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের ঘরেই ঘোরাফেরা করছে। ফলে নতুন চাকরির সংখ্যা বাড়ছে ১ শতাংশেরও কম হারে। রিপোর্টের প্রধান লেখক অমিত বাসোলে বলেন, ‘‘২০১১ থেকে ২০১৫-য় আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ৬.৮ শতাংশ। চাকরি বেড়েছে মাত্র ০.৬ শতাংশ। তার পরের বছরেও এই ছবিটা বদলায়নি।’’ 

বিভিন্ন সরকারি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে তৈরি ওই রিপোর্ট বলছে, চাকরি হলেও বেতন মিলছে নামমাত্র। গত এক দশকে সামগ্রিক ভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন বছরে ৩ শতাংশ হারে বাড়লেও এখনও ৮২ শতাংশ পুরুষ-কর্মী, ৯২ শতাংশ মহিলা-কর্মীর মাসিক বেতন ১০ হাজার টাকারও কম। অথচ কেন্দ্রের সপ্তম বেতন কমিশন অনুযায়ী, ন্যূনতম বেতন হল মাসে ১৮ হাজার টাকা।

লোকসভা ভোটের আগে মোদী সরকারের জন্য এর থেকেও বেশি চিন্তার কারণ হল, তফসিলি জাতি, জনজাতির মানুষদেরই কম বেতনের চাকরিতে ভিড় বেশি। ২০১১ থেকে ২০১৫-র মধ্যে গ্রামে কৃষিজীবী মানুষের আয় অনেকখানি কমেছে। পরের তিন বছরেও বিশেষ উন্নতি হয়নি। দেশ জুড়ে কৃষক, দলিতদের ক্ষোভ-প্রতিবাদের পিছনে এটাই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা। দিল্লি স্কুল অব ইকনমিক্সের অধ্যাপিকা অশ্বিনী দেশপাণ্ডের মন্তব্য, ‘‘যাঁরা বলেন, নিচু জাতের লোকেরা নিচু মানের কাজ করেন, তাদের জন্য এটা জাতপাতের নতুন ব্যাকরণ।’’


সর্বশেষ সংবাদ