লাল প্রোফাইল বিতর্ক: পর্যাপ্ত ডকুমেন্ট সরবরাহের হুঁশিয়ারি ফরহাদের

০৭ জুলাই ২০২৫, ১২:১৩ AM , আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩৮ PM
এস এম ফরহাদ

এস এম ফরহাদ © সংগৃহীত

গত বছরের ২৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অন্যান্য নিহতদের স্মরণে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। অন্যদিকে, এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখান করে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার আন্দোলনকারীদের প্রতি সহমর্মিতা ও সরকারের প্রতি প্রতিবাদস্বরূপ চোখে-মুখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা ও ফেসবুকে নিজেদের প্রোফাইল পিকচার লাল করার ঘোষণা দেয় আন্দোলনকারীরা।

এ গল্পটি রবিবার (৬ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ সামনে আনার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের ভিন্ন তথ্য বর্ণনা করলে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। বিষয়টিকে ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন এস এম ফরহাদ। 

তিনি বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাসকে বিকৃত করার অপচেষ্টা কখনোই সফল হবে না। রবিবার দিবাগত রাতে ফেসবুুকে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। এছাড়া, প্রয়োজনে সাংবাদিকদের কাছে পর্যাপ্ত ডকুমেন্টস সরবরাহের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। 

পাঠকদের জন্য তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হল: 

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাসকে বিকৃত করার অপচেষ্টা কখনোই সফল হবে না, ইনশাআল্লাহ।

আমাদের কোনো দাবি বা বর্ণনার বিপরীতে কেউ ভিন্ন কিছু দাবি করলে, প্রয়োজনে সাংবাদিকদের কাছে তাদের জন্য পর্যাপ্ত ডকুমেন্টস সরবরাহ করা হবে, ইনশাআল্লাহ।

ব্যক্তিগত আলাপ, চ্যাট এবং অন্যান্য ডকুমেন্টস সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়ার পক্ষপাতী নই।

 

এ বিষয়ে আব্দুল কাদেরের ফেসবুক পোস্টটি হল: 

জুলাইয়ে আন্দোলনের শেষের দিকের কর্মসূচিগুলা অনেকের সাথে আলাপ আলোচনা কর ঠিক করা হইতো। এক্ষেত্রে শিবিরের সাদেক কায়েম এবং ছাত্রদলের রাকিব-নাসির ভাইয়ের সাথে আলোচনা করতাম। আগের দিন দুপুরের পর থেকে দফায় দফায় আলোচনা করে পরবর্তী দিনের কর্মসূচি ঠিক করা হইতো। তারই ধারাবাহিকতায় ২৯ জুলাই তৎকালীন সরকারের পক্ষ থেকে পরবর্তী দিন রাষ্ট্রীয় শোক দিবস পালন এবং কালো ব্যাজ ধারণের ঘোষণা দেয়। আমাদের কর্মসূচি ঠিক করতে গিয়ে শেষ বিকেলের দিকে নাসির ভাইয়ের সাথে আমার কথা হয়, সরকারের ঘোষিত শোক দিবস এবং কালো ব্যাজ ধারণের বিপরীতে আমাদের লাল ব্যাজ ধারণের প্রস্তাবনা দেন তিনি। রাকিব-নাসির ভাইয়ের সাথে এই বিষয়ে আমাদের একাধিকবার কথা হয়। পরে আমি সাদিক কায়েম ভাইকে ফোন দিয়ে বিষয়টা জানাই। তিনি বললেন, আলোচনা করে আমাকে জানাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি ফোন দিয়ে সম্মতি দেন। প্রতিদিন কর্মসূচি ফাইনাল করার আগে আমরা চারজন- আমি, মাসউদ, রিফাত, মাহিন আলোচনা করতাম। শিবির এবং ছাত্রদলের সাথে অনেক সময় গ্রুপ কলে মিটিং করে কর্মসূচি ফাইনাল করতাম। তারই ধারাবাহিকতায় ঐদিনও আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করলাম। রিফাত বললো যে, “শোক দিবসের প্রতিবাদে আমরা কালো কাপড় চোখে মুখে বাঁধতে পারি”। আমি রিফাতকে নাসির ভাইয়ের আইডিয়ার কথা বললাম, লীগ যেহেতু কালো কাপড় দিছে, আমরা এইক্ষেত্রে লাল কাপড় বাঁধতে পারি। মাহিনও একই প্রস্তাব দিল।

পরবর্তীতে গতানুগতিক ধারায় বারবার করে সাদিক ভাই এবং নাসির ভাইয়ের সাথে আলোচনা করে চোখেমুখে লাল কাপড় বাঁধার কর্মসূচি ফাইনাল করা হলো এবং ছবি তুলে প্রোফাইল পিকচার দেওয়ার আহবান জানানো হলো। যাদের কাছে লাল কাপড় নেই, তারা যেনো প্রোফাইল "লাল" করে, ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে সেই সময়ে রিফাত রশিদ দেশবাসীর প্রতি এমন আহবান জানিয়েছিলেন। প্রোফাইল পিকচারের সাথে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ জুড়ে দেওয়ার বিষয়ে সাদিক ভাই পরামর্শ দেন, পরামর্শের আলোকে তিনি কিছু হ্যাশট্যাগও দিয়ে দেন।

এর আগে, এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, যখন রাষ্ট্র গণহত্যার বদলে নাটকীয়ভাবে রাষ্ট্রীয় শোক ও কালো পতাকা উত্তোলনের ঘোষণা দেয়, তখন আবু সাদিক কায়েম ভাই আমার কাছে পরামর্শ চায়। ভাই আমাকে বলেন, বল তো কী করা যায়। তখন ভাইকে বলি, আমরা পাল্টা প্রোগ্রাম দেই। তারা যেহেতু কালো দিয়েছে আমরা লাল দেই। 

তিনি বলেন, আইডিয়া শেয়ার করার পর সাদিক ভাই বললো এটা ভালো হতে পারে। এটাই হোক। তারপর আমরা প্রেস রিলিজ রেডি করে সমন্বয়কদের কাছে পাঠাই। পরে তারা এটি ঘোষণা করে। পরের দিন দেখি রাষ্ট্রের সকল শ্রেণীর নাগরিক তাদের ফেসবুক প্রোফাইল আপডেট দিচ্ছে। এমনকি ডা. ইউনূস, খালেদা জিয়ার ফেসবুক পেইজ থেকেও লাল প্রোফাইল শেয়ার করা হয়। 

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র কালো করছে তাই আমরা ভাবলাম আমরা লাল করি, আমরাও পাল্টা কর্মসূচি দেই। লাল তো রক্তের প্রতীক। এর মাধ্যমে আমরা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে পারি। তারপর  মুখে এবং চোখে লাল কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ জানানো ও যার যার প্রোফাইলকে লাল করার কর্মসূচি দিলাম। 

এই কর্মসূচি দেওয়ার কারণ জানিয়ে এস এম ফরহাদ বলেন,  এমন কর্মসূচি দেওয়ার বড় কারণ হচ্ছে তখন আমরা অনলাইন কর্মসূচি পালন করতাম, সফ্ট কর্মসূচি। হার্ড কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে দেখা গেলো প্রচুর গ্ৰেফতার, মামলা দেওয়া হচ্ছে। পরে আমরা ভাবলাম সফ্ট কর্মসূচি দেই। সফ্ট কর্মসূচি দিয়ে যদি অনেক বেশি সাড়া পাওয়া যায়, তখন আমরা হার্ড কর্মসূচিতে যাবো। যখন এই লাল করার কর্মসূচিটা সাড়া পেল, আমরা মোটিভেশন পেয়ে গেলাম। পরে আমরা মাঠের কর্মসূচিতে গিয়েছি। আমাদের প্রায় এক সপ্তাহের সফ্ট কর্মসূচির লাস্ট স্টেজ ছিল লাল প্রোফাইল দেওয়া।

থার্টি ফার্স্ট নাইটে ডিজে পার্টি ও আতশবাজি বন্ধসহ যেসব বিধি…
  • ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
যৌথ অভিযানে অবৈধ অস্ত্রসহ অস্ত্র ব্যবসায়ী আটক
  • ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশগ্রহণের সুবিধার্থে বিশেষ পরিবহন ব্য…
  • ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
ভেকু উল্টে পুকুরে পড়ে চালকের মৃত্যু
  • ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে শোক বই খুলেছে কবি নজরুল কলেজ ছ…
  • ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
বেগম খালেদা জিয়া রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অনন্য অধ্যায়: বেরোবি …
  • ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫