ঢাবির সূর্যসেন হল

রুমে রুমে আর পত্রিকা দেবেন না ‘তাহের ভাই’

তাহের ভাই ও ঢাবির সূর্যসেন হল
তাহের ভাই ও ঢাবির সূর্যসেন হল  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টার দা সূর্যসেন হলের খুবই পরিচিত মুখ ‘তাহের ভাই’। প্রতিদিন খুব ভোরে ওই হলের রুমে রুমে পত্রিকা দিতেন তিনি। আর সন্ধ্যার পর হলে আসতেন বিলের খাতা নিয়ে, বিল উঠাতে। ফলে সকাল-সন্ধ্যায় তাকে সূর্যসেন হলে দেখা যেতো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে চাকুরির পাশাপাশি ওই হলে পত্রিকা বিক্রি করতেন। চাকরি থেকে গতবছর অবসরে গেলেও তিনি হলে পত্রিকা দিতে নিয়মিত। সেই ‘তাহের ভাই’ চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আজ রবিবার (১২ ডিসেম্বর) তিনি মৃত্যুবরণ করেন বলে জানা গেছে।

তার মৃত্যুতে শোক জানানোর পাশাপাশি সমবেদনাও প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান ছাত্র থেকে শুরু করে সাবেক ছাত্রনেতা ও শিক্ষকরা। তারা বলছেন, তাহের ভাই অত্যন্ত ভাল মানুষ ছিলেন। সব সময় মুখে হাসি লেগে থাকতো। হল বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের সবাই মামা ডাকলেও তাহের ভাইকে ‘মামা’ না ডেকে সবাই ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করতো।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক আব্দুর রহিম ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। বিভাগের মিউজিয়াম বেয়ারার তাহের ভাই আমাদের মাঝে আর নেই৷ তাহের ভাই গতবছর অবসরে গেছেন। ভাবতেই পারা যায় না, জীবন এত ঠুনকো! কয়দিন আগে বিভাগে এসেছিলেন, হাস্যোজ্জ্বলভাবে কুশল বিনিময় হলো। তাহের ভাই বহুদিন বিভাগকে আন্তরিকভাবে সেবা করে গেছেন। তাহের ভাইয়ের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।

ওই হলের সাবেক ছাত্র ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের বেয়ারার ও সূর্যসেন হলের পত্রিকা বিতরণের কাজ করতেন আমাদের প্রিয় তাহের ভাই আজ সকালে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ মরহুম কে কবুল করুন এবং তার পরিবারকে এই শোক সইবার শক্তি দান করুন। আমিন।

ওই হলের সাবেক ছাত্র এহসানুল হক জসিম লিখেছেন, সূর্যসেন হলের তাহের ভাই হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। কারণ তিনি খুব ভোরে হলের রুমগুলোতে পত্রিকা দিতেন, সন্ধ্যার পর হলে আসতেন বিলের খাতা নিয়ে বিল উঠাতে। ফলে সকাল-সন্ধ্যায় উনাকে সূর্যসেন হলে দেখা যেতো। হল বা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমপ্লয়ীদের সবাই মামা ডাকলেও তাহের ভাইকে ‘মামা’ না ডেকে সবাই ভাই বলে সম্বোধন করতো। অত্যন্ত ভাল মানুষ ছিলেন। সব সময় মুখে হাসি লেগে থাকতো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলে আমরা যারা থাকতাম বা আমাদের আগে ও পরে যারা থাকতো, তাদের সকলের কাছে খুবই পরিচিত নাম তাহের ভাইয়ের মৃত্যুতে নিশ্চয়ই সবাই কষ্ট পাবেন। কারণ, এত ভাল মনের মানুষ খুব কমই হয়। তাহের ভাইয়ের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।