কেন ‘সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে’ বলেছিলেন ঢাবির আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা, জানেন না নিজেই!
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫২ PM , আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫, ১২:২৭ PM
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন দলটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অনেক নেতাকর্মী। তেমনি একজন মঞ্জুর হোসেন। গণ-অভ্যুত্থানের আগে আওয়ামীপন্থী এই কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের ভিসি অফিসের ডেপুটি রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
গণ-অভ্যুত্থানের পর ফেসবুকের এক কমেন্টে আওয়ামীপন্থী এই কর্মকর্তা ‘সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে’ বলেছিলেন। তবে কেন তিনি সেই মন্তব্য করেছিলেন তার সদুত্তর দিতে পারেননি। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের করা তদন্ত কমিটির কাছে এই সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আবু হোসেন এম আহসান ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন, সিন্ডিকেট সভায় আওয়ামীপন্থী সদস্যদের না ডাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সেখানে। পোস্টে তিনি নির্বাচিত সিন্ডিকেট সদস্যদের আমন্ত্রণ না জানানোর বর্তমান প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত বেআইনি, অদূরদর্শী ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেন।
সেই পোস্টে আওয়ামী এই কর্মকর্তা লিখেন, “ওরা তো পারলে দেশের নামই বদলিয়ে ফেলে। আমার মনে হয় আমাদের চুপ না থেকে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত।” এরপর এই কমেন্টকে কেন্দ্র করে চলে আলোচনা-সমালোচনা।
পরবর্তীতে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসে ‘‘ফেসবুকের কমেন্টে ‘সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে’ বললেন ঢাবির আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা’’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন। সম্প্রতি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের সভায় উঠে।
সিন্ডিকেটের এজেন্ডায় বলা হয়, ‘‘গত ১১ ডিসেম্বর ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাসের পরিপ্রেক্ষিতে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় রেজিস্ট্রারের অফিসের শিক্ষা-১ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার জনাব মঞ্জুর হোসেন-এর বিষয়ে কি করণীয় বিবেচনা।’’
‘‘উল্লেখ্য, তিনি ফেসবুকের কমেন্টে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলেছেন। এছাড়া তিনি আরও লিখেছেন যে, ‘ওরা তো পারলে দেশের নামই বদলিয়ে ফেলে। আমার মনে হয় আমাদের চুপ না থেকে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত’। জনাব মঞ্জুর হোসেন ৫ আগস্টের পূর্বে উপাচার্যের অফিসে ডেপুটি রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি স্টুডেন্ট প্রমোশন এন্ড সাপোর্ট ইউনিটে কর্মরত।’’
সিন্ডিকেটের এজেন্ডায় বলা হয়, ‘‘জনাব মঞ্জুর হোসেন ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন এবং পরে ২০২০ সালে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ প্রকাশিত কমিটিতে তার নাম ৩৭ নম্বরে আছে। এ বিষয়ে তার নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।’’
আওয়ামীপন্থী এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদকে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।