চবির চারুকলাকে ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত, অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

  © টিডিসি ফটো

মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে দীর্ঘ ৩৪ ঘণ্টা অনশন কর্মসূচি পালনের পর প্রশাসনের সিদ্ধান্তে অনশন ভেঙেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের নয়জন শিক্ষার্থী। জরুরি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) থেকেই চারুকলাকে ক্যাম্পাসে ফেরানোর কার্যক্রম শুরু হবে। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সিন্ডিকেট সভা শেষে ১১টায় শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানানো হলেও অনশন ভাঙেননি তারা। প্রশাসনের সঙ্গে দীর্ঘ বাকবিতণ্ডার পর রাত দেড়টার দিকে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান।  

জরুরি সিন্ডিকেট সভায় হওয়া ৬টি সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের জানান উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান।

সিদ্ধান্তগুলো হলো- ১. চট্টগ্রাম শহরের চারুকলা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু করবে।

২. চারুকলা ইনস্টিটিউটের বর্তমান স্থাপনাসমূহ, আর্কাইভ, আর্ট গ্যালারি, চারুকলার প্রদর্শনীসমূহ, ব্যবহারিক ল্যাব ও ছাত্রাবাসের কাজে ব্যবহার করা হবে।

৩. বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ড্রয়িং ও পেইন্টিং, প্রিন্ট মেকিং, সিরামিকস- এই চারটি নতুন বিভাগ নিয়ে চারুকলা অনুষদ চালু হবে।

৪. চট্টগ্রাম শহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ত্তাধীন চারুকলার সকল সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৫. চারুকলা ইনস্টিটিউটের সম্পত্তি দখল বা বেদখলের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ সম্পৃক্ত থাকলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৬. চারুকলা ইনস্টিটিউটের সম্পত্তির বিষয়ে সরকারি গেজেট ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রের অপব্যাখ্যা, মনগড়া তথ্য প্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে প্রকৃত অবস্থা থেকে আড়ালে রাখার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করার জন্য চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন।

কমিটিতে আহ্বায়ক ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. নেছারুল করিম। সদস্য সচিব ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুস সবুর। এছাড়া সদস্য হিসেবে রয়েছেন আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মঞ্জুর মোর্শেদ।

শিক্ষার্থীরা জানান, সিন্ডিকেটে চারুকলাকে ক্যাম্পাসে ফেরানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আমরা অনশন ভেঙেছি। আজ থেকে চারুকলাকে ক্যাম্পাসে ফেরানোর কাজ অফিসিয়ালি শুরু হচ্ছে এজন্য আমরা খুশি।

উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, আমার জীবনেও আমি এরকম পরিস্থিতিতে পড়িনি। এখন রাত প্রায় পৌনে ২টার কাছাকাছি। জরুরি সিন্ডিকেট সভায় শহরস্থ চারুকলা ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপরও শিক্ষার্থীরা বুঝতে চাইছিল না। দীর্ঘ চেষ্টার পর তাদের অনশন ভাঙাতে সফল হয়েছি। শিক্ষার্থীরা আমাদের উপর আস্থা রেখেছে। আমরা দ্রুত এ কাজ সম্পাদন করবো। 

উল্লেখ্য, চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে ফেরানোর দাবিতে সোমবার দুপুর ৩টা থেকে আমরণ অনশনের ডাক দেয় শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন বিষয়টি সমাধান করতে সিন্ডিকেট মিটিং আহবান করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জরুরি সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়।


সর্বশেষ সংবাদ