ভর্তিচ্ছু ছাত্রীকে ‘চোর’ বললেন রাবি অধ্যাপক ওমর ফারুক
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪০ PM , আপডেট: ৩০ নভেম্বর -০০০১, ১২:০০ AM

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকারের বিরুদ্ধে ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে এক ভর্তিচ্ছু নারী শিক্ষার্থীর সাথে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় প্রথম শিফটের ভর্তি পরীক্ষা শেষে প্রক্টর বরাবর অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দেন ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আনিকা তাসনীম জেবা। তিনি নঁওগার নিয়ামতপুর থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ৪০৮ নম্বর কক্ষে প্রথম শিফটের পরীক্ষার্থী ছিলেন।
লিখিত অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, পরীক্ষা শুরুর প্রায় আধা-ঘণ্টা পর দায়িত্বরত শিক্ষক স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য আমার নিকট আসেন। আমার মাথায় ওড়না থাকায় এবং প্রবেশপত্রের ছবিতে মাথায় ওড়না না থাকায় তিনি আমাকে ধমক দেন এবং বলেন, 'তুমি যেভাবে ছবি উঠিয়েছ, সেভাবে যেহেতু আসোনি, সেহেতু এই ক্যাম্পাসে প্রবেশের অধিকার নেই'। এ ছাড়া তিনি অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন। আমাকে 'চোর' বলে সম্বোধন করেন এবং বলেন 'একে সাইজ করা দরকার'।
অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী আরও উল্লেখ করেন, এক পর্যায়ে তিনি আমার খাতা কেড়ে নেন এবং প্রায় ১০ মিনিট পর ফেরত দেন। তার ধমক এবং ভাষা শুনে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। ফলে আমি ভালোভাবে পরীক্ষা শেষ করতে পারিনি। তিনি যদি দুর্ব্যবহার না করতেন, আমি আরো কয়েক নম্বর বেশি পেতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি উচ্চপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের নিকট থেকে এমন দুর্ব্যবহার পরীক্ষার হলে আমি আশা করিনি। তাই আমি এর যথাযথ বিচার চাই।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী আনিকা তাসনীম জেবা বলেন, ওই শিক্ষকের (অভিযুক্ত) আচরণ কোনো নারী নিতে পারবে না। একজন দায়িত্বরত শিক্ষককের আচরণ এমন হতে পারে না। আমার পোশাক নিয়ে তিনি কেন কথা বলবেন? বর্তমান সময়ে এসেও নারীদের পোশাক নিয়ে কথা শুনতে হয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, পরীক্ষা হলে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি এরকম কোনো কথা বলিনি। আমি কেন একজন শিক্ষার্থীকে চোর বলতে যাবো। আমার মেয়েও তো পরীক্ষা দিচ্ছে। কারো থেকে কোনো খাতাও আমি নেইনি। আমাদের রিপোর্টেও এরকম কিছু নেই। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রক্টরিয়াল বডির পক্ষ থেকে তাকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। অভিযোগটি সত্য প্রমাণিত হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকারের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তা, নারী শিক্ষার্থীতে কল দিয়ে বিরক্ত করা, আপত্তিকর মেসেজ প্রদান ও পরীক্ষার খাতায় মার্ক কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।