আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংলাপ চট্টগ্রামে, বর্জনের আহ্বান সমন্বয়কদের

  © সংগৃহীত

শিক্ষাব্যবস্থাকে যারা ধ্বংস করেছেন সেই আওয়ামীপন্থিরাই আবার শিক্ষাব্যবস্থা কেমন হবে সেটার আউটলাইন (রূপরেখা) তৈরি করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও চবি শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদ।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল পৌনে ৪টায় ‘কেমন শিক্ষা ব্যবস্থা চাই, কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই?’ শিরোনামে আওয়ামীপন্থিদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মুক্ত সংলাপ বর্জন করে এদিন দুপুরে এক ফেসবুক লাইভে এসব কথা বলেন তিনি।

লাইভে রাসেল আহমেদ বলেন, গতকাল চট্টগ্রামে একটা ধর্মীয় সংঘাত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। আলহামদুলিল্লাহ, এখন এটা নিয়ন্ত্রণে আছে। যেটা জানিয়ে রাখার জন্য লাইভে আসা সেটা হচ্ছে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাব্যবস্থা কেমন হবে এ নিয়ে একটা মুক্ত সংলাপের আহ্বান করেছে আওয়ামী লীগের দালালেরা। আমরাও চাই মুক্ত সংলাপ হোক। বিশ্ববিদ্যালয় কেমন হবে, শিক্ষাব্যবস্থা কেমন হবে, আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে এ নিয়ে সেমিনার হোক এবং সেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকল ধরনের পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ থাকুক।

তিনি বলেন, কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আওয়ামী লীগের দোসর শিক্ষক নগরীর কাজির দেউড়িতে একটা মুক্ত সংলাপের আহ্বান করেছে। অর্থাৎ কাজির দেউড়ির আশেপাশেই যেখানে গতকাল একটা সাম্প্রদায়িক সংঘাত হবার সমূহ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। ঠিক সেই জায়গায় আওয়ামী একজন শিক্ষক মুক্ত সংলাপের আহ্বান করেছে।

তিনি আরও বলেন, নতুন বাংলাদেশে আমরা স্বাধীনভাবে আমাদের মতামত ও চিন্তাধারা প্রকাশ করতে পারছি এবং আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে সেসব নিয়ে আলোচনা করতে পারছি। যারা এ আন্দোলনের ফ্রন্টলাইনে ছিল ও নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদেরকে না জানিয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে এরকম সংলাপ আশা করতে পারি না। এটা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মইনুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগের হলুদ দলের আহ্বায়ক ছিলেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি-সেক্রেটারি ছিলেন এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনা কর্তৃক নিয়োগকৃত বিআইবিডিএমের ডিরেক্টর জেনারেল ছিলেন। এখন পর্যন্ত আওয়ামী মনোনীত সিলেকশন বোর্ডের সদস্য আছেন, আওয়ামী মনোনীত ইউজিসি অধ্যাপক।

এই সমন্বয়ক বলেন, আওয়ামী, জেদি ও হিংসুটে শিক্ষক মইনুল বিভাগের শিক্ষার্থী ও ভিন্ন মতের শিক্ষকদের হয়রানি করতেন। আওয়ামী সরকারের পক্ষে পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখে সবক দিতেন। অর্থাৎ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আস্থাভাজন একজন শিক্ষক যিনি কি-না মুক্ত সংলাপের আহ্বান করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশে আহ্বানটা করেছেন, স্বাধীনতার নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীদের না জানিয়েই। অর্থাৎ গোপনে একটা মুক্ত সংলাপের আহ্বান করেছেন। প্রশ্ন থেকেই যায়, সেটা কার সাথে হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে, কেন হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে যারা ধ্বংস করেছেন তারাই আবার কি-না শিক্ষাব্যবস্থা কেমন হবে সেটার আউটলাইন তৈরি করতে চাচ্ছেন। সকলের মতামতের স্বাধীনতা সরকার নিশ্চিত করছে। কিন্তু যারা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে তারাই যদি শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আবার আলোচনা করতে চায়, শিক্ষাব্যবস্থা কেমন হবে তা নিয়ে সংলাপ করতে চায়, সেটা একধরনের স্ববিরোধীতা। আমরা এই মুক্ত সংলাপকে প্রত্যাখ্যান  করছি। যারা গোপনে আওয়ামী লীগের দোসর হয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন তাদেরকে হুঁশিয়ার করে জানিয়ে দিতে চাই, আপনারা আওয়ামী লীগের দোসর হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবেন না। আপনারা সাবধান হয়ে যান।


সর্বশেষ সংবাদ