ঢাবির হলে শিক্ষার্থীদের রুমে কর্মচারীদের বসবাসে’র জেরে বিক্ষোভ, প্রধান ফটকে তালা 

কর্মচারীদের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
কর্মচারীদের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদ্দিন হলের একাংশ দখল করে বসবাস করতে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে হলটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রবিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ হলটির দুই ভবনের মধ্যবর্তী স্থানে হলটির শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে 'কর্মচারীদের স্থানান্তর করো' স্লোগানের মাধ্যমে আন্দোলনের সূচনা করে। পরবর্তীতে একটি মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা হলটির প্রধান ফটকে তালা দেন।

হলটির শিক্ষার্থী মাসুদ হোসেন বলেন, আমরা জায়গার অভাবে ৮ জনের রুমে ১২ জন ফ্লোরিং( মেঝেতে) করে থাকি। শিক্ষার পরিবেশ হলো নাকি এটা? প্রায় দেড়শ থেকে দুইশত শিক্ষার্থীর আবাসস্থল তারা দখল করে আছে। তাদেরকে স্থানান্তর করতে পারলে একটু হলেও শিক্ষার্থীরা শান্তিতে থাকবে।

হলটির আরেক শিক্ষার্থী বলেন, যাদেরকে আমাদের সেবা করার জন্য অথচ তারাই হলের সেবা নিয়ে আমাদের সাথে থাকেন। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। এমনিতেই জসীম উদদীন হলে প্রচণ্ড আবাসিক সংকট তারপর যদি দক্ষিণ ভবনের অর্ধেক কর্মচারীদের দখলে থাকে তাহলে আমাদের থাকা জায়গাকে নিশ্চিত করবে? আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাদের যৌক্তিক দাবি তুলে ধরছি।

আরও পড়ুন: ঢাবির দেড়শ শিক্ষার্থীর আবাসন ‘লাখ টাকা’ বেতন পাওয়া কর্মকর্তাদের দখলে

এসময় শিক্ষার্থীরা কর্মকর্তাদের কর্মচারীদের গেটেও তালা দেন এবং সাতদিনের মধ্যে কর্মচারীদের স্থানান্তর করার জন্য আলটিমেটাম দিয়েছেন। এ ধরনের আন্দোলন চলতে থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে হলটির প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহীন খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, হল প্রশাসন এ বিষয়ে অবগত আছি। শিক্ষার্থীরা চাইলে আমাকে স্মারকলিপি দিতে পারতো। হলের ভেতর তো  সিন ক্রিয়েট করার কোনো দরকার নেই। প্রশাসন তো ঘুমাচ্ছে না। আমরা এটা অলরেডি কাজ করছি।

কবি জসীম উদদীন হলে ২টি ভবন রয়েছে। একটি দক্ষিণ ভবন অন্যটি উত্তর ভবন। দক্ষিণ ভবনের নিচতলায় শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য মাত্র চারটি কক্ষ রয়েছে। তবে ২য় তলা পুরোটাতেই শিক্ষার্থীরা থাকছেন। ৩য় তলায় অর্ধেক শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ বাকি অর্ধেকে একটি রিডিং রুম। বাকি জায়গায় থাকেন দুজন কর্মকর্তার পরিবার। চতুর্থ এবং পঞ্চম তলায় শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক এবং বাকি অর্ধেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের পরিবারসহ থাকছেন।এছাড়াও হলটি যখন তৈরি হয় তখন আবাসিক শিক্ষকদের জন্য কোনো আবাসস্থল ছিল না। ফলে ব্যাচেলর আবাসিক শিক্ষকদের জন্য ভবনটির একাংশ এমনভাবে তৈরি করা হয়, যাতে করে শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের সংযোগ না থাকে। এজন্য আলাদা সিড়িও তৈরি করা হয়েছে। তবে আবাসিক শিক্ষকদের জন্য আলাদা কোয়ার্টার হলেও জায়গাটা শিক্ষার্থীদেরকে না দিয়ে  কর্মকর্তাদের দখলে দেয় হল প্রশাসন।

উল্লেখ্য, গত ১৭ ই মে "ঢাবির দেড়শো শিক্ষার্থীর আবাসন লাখ টাকা বেতন পাওয়া কর্মকর্তাদের দখলে" শিরোনামে প্রতিবেদনে প্রকাশ করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস।


সর্বশেষ সংবাদ