জাবিতে মুগ্ধতা ছড়ানো প্রজাপতি মেলা

জাবিতে প্রজাপতি মেলা উপভোগ করছে দর্শনার্থী ও শিশু-কিশোররা
জাবিতে প্রজাপতি মেলা উপভোগ করছে দর্শনার্থী ও শিশু-কিশোররা  © টিডিসি ফটো

ইটপাথরের নান্দনিক নগরের বাসিন্দাদের জীবনে কেবলই যান্ত্রিকতার ছোঁয়া। আধুনিক সংস্কৃতিমনা রাজধানীবাসীর প্রকৃতির সান্নিধ্যে আনতে মেলার আয়োজন অন্যতম উদ্যোগ। তাই শীতের আগমনী বার্তার সন্ধিক্ষণে রাজধানীর অদূরেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বসেছিল বিনোদনের এক ভিন্নধর্মী মাধ্যম প্রজাপতি মেলা। অর্ধশত প্রজাপতির বর্ণিল ডানাওয়ালা প্রজাপতি আনন্দ বিলিয়েছে এ মেলায়। যেন এক অজানা অকৃত্রিম ভালোবাসা মিশে থাকে প্রজাপতির ডানায়। 

মেলায় পদচারণা ছিল সব বয়সের মানুষের। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের প্রজাপতির রূপধারণের দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। নিঃসন্দেহে মধুর মমতায় মেলাটি হাজার ব্যস্ততার মাঝেও দর্শনার্থীদের বেঁধেছিল প্রকৃতির মায়ায়। শিশু কিংবা বৃদ্ধ, কিশোর কিংবা কিশোরী মেলাতে সবাই ছিল উচ্ছ্বসিত। তাইতো পুরো ক্যম্পাসটাই ছিল প্রাণবন্ত।

‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুক্রবার (২৪ নেভেম্বর) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয় প্রজাপতি মেলা। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম মেলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে ২০১০ সাল থেকে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে ব্যতিক্রমধর্মী এই মেলা।

এদিন সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে মেলার উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম।

উদ্বোধনকালে উপাচার্য বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ আকর্ষণ প্রজাপতি মেলা এবং পাখি মেলা যেটা উপভোগ করতে সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সবাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে থাকেন। আমরা 'পাখি মেলা-২০২৩' জানুয়ারি মাসের করার পরিকল্পনা করছি। দর্শনার্থীসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার অংশগ্রহনকারী ও প্রজাপতি বিশেষজ্ঞসহ সকলকে ধন্যবাদ জানাই। একইসাথে প্রাণ-প্রকৃতি সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রজাপতি হলো একটি ছোট্ট নান্দনিক প্রাণী যা মানুষকে আনন্দ দেয়। দিনে দিনে এই প্রাণীটি প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। পূর্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১০ প্রজাতির প্রজাপতি পাওয়া যেত। এখন সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৫২ প্রজাতিতে। গাছপালা বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রজাপতি রক্ষা করতে হবে। কেননা প্রজাপতির পরাগায়নেই উদ্ভিদ ও গাছের সৃষ্টি। তাই মানুষের মাঝে প্রজাপতির গুরুত্ব বুঝানো এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমাদের এই মেলার আয়োজন।

এদিকে এ বছর বন্যপ্রাণী ও প্রজাপতি সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলামকে ‘বাটারফ্লাই এওয়ার্ড-২০২৩’ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জহির রায়হানকে ‘বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট-২০২৩’ এওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এবছরই প্রথম প্রিন্ট, অনলাইন ও ব্রডকাস্ট এই তিন ক্যাটাগরিতে তিনজনকে মিডিয়া এওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন কিউট প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খানসহ আরও অনেকে।

দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজনে ছিল- প্রজাপতিবিষয়ক ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা (শিশু-কিশোরদের জন্য), প্রজাপতি ও প্রকৃতিবিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা (শিশু-কিশোরদের জন্য), প্রজাপতির আলোকচিত্র প্রদর্শনী, প্রজাপতিবিষয়ক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির হাট দর্শন, প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি উড্ডয়ন, বারোয়ারি বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতি বিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠান।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence