জাবির ইমেরিটাস অধ্যাপক পদের নীতিমালা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) তিন সম্মানজনক পদ ইমেরিটাস অধ্যাপক, সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু চেয়ার-২০২৩ এর নীতিমালার ব্যাপারে মতামত নেওয়ার জন্য আজ মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) অনুষ্ঠেয় একাডেমিক কাউন্সিলে উপস্থাপন করা হবে। বিষয়টি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকে। তবে শঙ্কাও তৈরি হয়েছে অংশীজনদের মধ্যে।

এর আগে গত ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ তিন পদের বিষয়ে মতামত গ্রহণ ও অনুমোদন হয়। ইতোমধ্যে একাডেমিক কাউন্সিল সদস্যদের নিকট পাঠানো আলোচ্যসূচিতে ৪০ নম্বর ক্রমিকে এটি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এ অধ্যাদেশে মোট ১১টি ধারা রয়েছে। এতে ইমেরিটাস অধ্যাপক নিয়োগে যোগ্যতা, সুযোগ-সুবিধা, দায়িত্ব ও কর্মপরিধি, মেয়াদ ইত্যাদি বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অর্ধশতক পরে সম্মানজনক এ পদগুলো চালু হওয়ায় অংশীজনদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিলেও বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ বিধি লঙ্ঘন ও নানাবিধ বিষয় নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। এ অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ এ পদগুলোর অনুমোদন অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারেও বলে মত তাদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাণিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান অনুষদের একজন অধ্যাপক বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর সম্মানজনক এসব পদ চালু করা নিয়ে আশান্বিত ছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের সার্বিক তৎপরতায় আমরা একটু শঙ্কার মধ্যে রয়েছি। নীতিমালায় নিয়োগের যোগ্যতা উল্লেখ করা হলেও নিয়োগের অযোগ্যতা উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া এই অধ্যাদেশ প্রণয়নে সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে নেই কোনো শিক্ষক প্রতিনিধি। একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদন না নিয়ে নিয়োগ হলে এ উদ্যোগের পেছনের সদিচ্ছা বিতর্কের মুখে পড়বে।’

প্রতিষ্ঠার অর্ধশতক পরে সম্মানজনক এ পদগুলো চালু হওয়ায় অংশীজনদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিলেও বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ বিধি লঙ্ঘন ও নানাবিধ বিষয় নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। এ অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ এ পদগুলোর অনুমোদন অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারেও বলে মত

প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘আমি মনে করি এটা পদ্ধতিগতভাবে সঠিক হয়নি। কারণ বিষয়টি নিয়ে অর্ডিন্যান্স প্রণয়ন সিন্ডিকেটে কার্যকর করার পর একাডেমিক কাউন্সিলে মতামত নেয়ার জন্য পাঠিয়েছেন। অথচ বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে একাডেমিক কাউন্সিলের। আগে একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা হওয়া উচিৎ ছিল। এরপর একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ অনুযায়ী সিন্ডিকেট অধ্যাদেশ প্রণয়ন করতে পারতো।’

তিনি বলেন, ইমেরিটাস অধ্যাপকের জন্য প্রণীত নীতিমালার ভূমিকাতে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ ১৯৭৩ এর ২৩(২) ধারার উপধারায় স্টাটিউট অনুসরণ করার কথা এবং স্টাটিউট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশের অপরিহার্যতার কথা উল্লেখ আছে। সুতরাং এক্ষেত্রে আগে অর্ডিন্যান্স তৈরি করে পরে মতামতের জন্য পাঠানো একটি প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়।

আরো পড়ুন: ঢাবি-বুয়েটসহ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের নিয়ে কমিটি, নেতৃত্বে ইউজিসি

উল্লেখ্য, সংযুক্ত অধ্যাদেশে ইমেরিটাস অধ্যাপক নিয়োগ কমিটির ব্যাপারে বলা হয়েছে সিন্ডিকেট কর্তৃক সভাপতি থাকবেন উপাচার্য। এছাড়া উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), দু’জন বিদেশি বিশেষজ্ঞ, দু’জন খ্যাতনামা বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ এবং একজন সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন সদস্য হিসেবে থাকবেন।

প্রসঙ্গত, এর আগে সিন্ডিকেটে অধ্যাদেশের বিষয়টি ওঠার সময় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদত্যাগকৃত একজন সাবেক উপাচার্যকে নিয়োগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিশেষ আগ্রহের বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।

সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি।


সর্বশেষ সংবাদ