অনশনরত জাবি শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ছাত্রলীগের, ঘেরাও ভিসির বাসভবন

অনশনরত শিক্ষার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে জাবি উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও শিক্ষার্থীদের
অনশনরত শিক্ষার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে জাবি উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও শিক্ষার্থীদের  © সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণরুম বিলুপ্তিসহ ৩ দফা দাবিতে অনশনকারী শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম প্রত্যয়সহ কয়েকজনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (০৬ জুন) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় লোডশেডিং চলছিল। এরপর ঘটনার প্রতিবাদ ও সংকট সমাধানে পাঁচ দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে শিক্ষার্থীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কতিপয় ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী প্রত্যয়ের অনশনস্থলে গিয়ে হামলা করে। সেই সময় প্রত্যয়ের বিছানা-বালিশ তছনছ এবং স্যালাইন রাখার স্ট্যান্ড ভাঙচুর করা হয়। তখন তাদের বাধা দিতে গেলে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচি ও কয়েকজন ছাত্রীকেও তারা মারধর করে।

এরপর তারা প্রত্যয়কে জোরপূর্বক বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান জাবি শিক্ষার্থী গৌতম কুমার দাস। আর ভাঙচুর চালিয়েছেন গোলাম রাব্বী। তারা ২ জনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং জাবি ছাত্রলীগের নেতা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, প্রত্যয়ের সঙ্গে যে শিক্ষার্থীরা ছিলেন, তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর প্রত্যয়কে দেখতে চিকিৎসক আসেন। তখন তারা অ্যাম্বুলেন্সে হামলা করে সেটা ফেরত পাঠিয়ে দেয়।

এই ঘটনার সময়ে প্রক্টরকে জানানো হলেও তিনি আসেননি বলে অভিযোগ ওই শিক্ষার্থীদের। একইসঙ্গে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীরা।

ঘটনার পর রাত সাড়ে ১১টায় ঘটনাস্থলে আসেন জাবি প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান। এ সময় তিনি বলেন, ঘটনা শুনে আমরা এসেছি। এখানে যেসব শিক্ষার্থী হামলা করেছে, তাদেরকে আমরা শনাক্ত করতে পারিনি। তারা ছাত্রলীগ করে কি না, এটাও জানি না। কারা হামলা করেছে আমরা তদন্ত করে বের করে ব্যবস্থা নেব।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে কর্মকর্তারা জানান, তাদের কাছে কল আসে মীর মশাররফ হোসেন হলে একজন অসুস্থ, অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে। কে কল দিয়েছিল, সেটা তারা জানেন না।

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বলেন, ছাত্রলীগ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। যদি কোনোভাবে কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্যদিকে প্রত্যয়ের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে রাত সোয়া ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।

এমএইচ হলে অবস্থানরত সব মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সূর্য ওঠার আগে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করা, পর্যায়ক্রমে সব হল থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ছাড়া করা, ছাত্রী নিপীড়ন ও হামলাকারীর প্রত্যেককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার এবং তাদের বিরুদ্ধে উপাচার্যকে বাদী হয়ে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলাসহ মোট পাঁচ দফা দাবি নিয়ে রাতে ভিসির বাসার সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও প্রক্টর ও প্রভোস্টকে অব্যাহতি এবং গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতির অবসানের পাশাপাশি প্রথম বর্ষ থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর সিটের ব্যবস্থার দাবিও ছিল অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৩১ মে রাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের খেলার মাঠে অনশনে বসেন জাবির ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (৪৯তম ব্যাচের) শিক্ষার্থী এবং মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে থেকে অছাত্রদের বের করা, হলের মিনি গণরুমে অবস্থান করা বৈধ ছাত্রদের আসন নিশ্চিত করা এবং গণরুম বিলুপ্ত করার দাবিতে অনশনে বসেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence