উপাচার্যের মেয়ের ফল নিয়ে বিভক্ত জাবি শিক্ষকরা, পাল্টাপাল্টি বিবৃতি
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২৩, ০৮:১৫ PM , আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৩, ০৮:১৫ PM
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলমের মেয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ফলাফল নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন শিক্ষকরা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামীপন্থি ও বিএনপিপন্থি শিক্ষকরা বিভক্ত হয়ে উপাচার্যের পক্ষে-বিপক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ ‘লিফলেটের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম নিজেদের অসততাকেই উন্মুক্ত করেছেন’ শীর্ষক বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
এতে উপাচার্য কন্যার ফলাফল নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে উল্লেখ করে লিফলেটে বলা হয়, বিভিন্ন ঘটনায় উপাচার্যের নির্লিপ্ততার অভিযোগ তোলা হয়েছে। যা নির্লজ্জ মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়। সকলেই জানেন এমন সক্রিয় উপাচার্য কম দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানামাত্রিক ঘটনা-দুর্ঘটনা সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল এবং তিনি নিজে অথবা সিনেট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সদা তৎপর।
‘‘অত্যন্ত দুঃখজনক যে লিফলেটে উপাচার্যের কন্যাকেও টেনে আনা হয়েছে। ন্যূনতম মানবিকতা থাকলে তারা বরং প্রশ্ন করতেন উপচার্য হওয়ার আগে তাঁর কন্যা স্নাতকে দ্বিতীয় স্থান পেয়ে উপাচার্য হওয়ার পরে স্নাতকাত্তর পরীক্ষায় ৭ম স্থান পেল কেন?’’
অন্যদিকে গত ২ মার্চ বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ক্ষমতার অপব্যবহার করে একাডেমিক কাউন্সিলে অনুমোদিত স্নাতকোত্তর পরীক্ষা কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। উপাচার্যের কন্যা উক্ত পরীক্ষায় একজন পরীক্ষার্থী থাকায় ক্যাম্পাসবাসীর মনে এই ঘটনা নানান প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। ১৯৭৩-এর অ্যাক্ট, অর্ডিন্যান্স ও সংবিধিকে সমুন্নত রাখা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিশেষ করে উপাচার্যের আইনগত দায়িত্ব ও নৈতিক কর্তব্য।’
আরও পড়ুন: লাইফ সাপোর্টে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থী
বিবৃতিতে ‘শিক্ষক ফোরামের বিবৃতিকে অত্যন্ত নিম্নরুচি ও অশিক্ষকসুলভ, নোংরা প্রচারপত্র এবং ছিদ্রান্বেষী তৎপরতা বলে আখ্যায়িত করা হয়।’
বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যাপক বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিশ্রুত গুরুত্বপূর্ণ এবং দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত একাডেমিক কার্যক্রম বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে সর্ববৃহৎ ৬ষ্ঠ সমাবর্তন মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। সমাবর্তন সম্পন্ন হওয়ার পর তিনি খাতওয়ারি এর আয়-ব্যয়ের হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশ করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
এতে বলা হয়, আমরা সকলেই জানি সমাবর্তনের মত বৃহৎ একাডেমিক কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আর নেই। এত বড় আয়োজনের বিভিন্ন খাতের হিসাব চূড়ান্ত করার জন্য কিছু সময়ের প্রয়োজন। কিন্তু সে সময় না দিয়েই অরুচিকরভাবে “জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম” এর নামে একটি আপত্তিকর লিফলেট প্রচার করা হয়েছে। যা অত্যন্ত নিম্নরুচি ও অশিক্ষকসুলভ। প্রকৃত পক্ষে এ লিফলেটের মাধ্যমে এর প্রচারকারিগণ নিজেদের অসততাকেই উন্মুক্ত করেছেন। আসলে এ ধরনের লিফলেট ছিদ্রান্বেষী তৎপরতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, নিশ্চয় তাদের সময়ের (বিএনপি শাসনামলে) সমাবর্তনে আয়-ব্যয়ে অনেক অসঙ্গতি ছিল। তারা নিজেরা হয়ত লুটপাটে জড়িত ছিলেন। তাই ধরেই নিয়েছেন বর্তমান প্রশাসনও তাদের মত আয়-ব্যয়ের হিসাব আড়াল করতে চান। এ বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য বর্তমানে হিসাব আড়াল করার প্রশ্নই আসেনা। যথা সময়ে যথাস্থানে তা তুলে ধরা হবে।